Friday, November 14, 2014

শিক্ষকদের পৃথক বেতন কাঠামোর পরিকল্পনা রয়েছে: শিক্ষামন্ত্রী




শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষকতা পেশায় আকৃষ্ট করতে জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০এর আলোকে শিক্ষকদের জন্য পৃথক বেতন কাঠামো প্রণয়নের পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। তিনি আজ সংসদে স্বতন্ত্র সদস্য মো. রুস্তম আলী ফরাজীর এক প্রশ্নের জবাবে আরো বলেন, ইতোমধ্যে সরকার এ লক্ষ্যে আর্থিক সুবিধা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা প্রদান করছে। সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত সহকারি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দ্বিতীয় শ্রেণীর গেজেটেড পদমর্যাদায় উন্নীত করা হয়েছে। এখন শতকরা ৫০ এর স্থলে শতকরা ৮০ ভাগ সহকারি শিক্ষক-শিক্ষিকা সহকারী প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকা পদে পদোন্নতির সুযোগ পাবেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, জাতীয় বেতন স্কেল ২০০৯ এর ৯ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রথম নিয়োগ প্রাপ্তিতে যে সকল ব্যক্তির ইঞ্জিনিয়ারিং বা স্থাপত্যবিদ্যায় ডিগ্রি বা মাস্টার্স ডিগ্রিসহ সরকার কর্তৃক এতদউদ্দেশ্যে স্বীকৃত কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (ইনস্টিটিউট) থেকে ফিজিক্যাল প্ল্যানিং এ ডিগ্রি রয়েছে অথবা আইন বিষয়ে স্নাতক (সম্মান)সহ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি রয়েছে এবং যদি ওইরূপ ডিগ্রি সংশ্লিষ্ট পদের জন্য ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে নির্ধারিত থাকে, তাহলে উক্ত যোগ্যতাসম্পন্ন নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে দুটি অগ্রিম বেতন বৃদ্ধি প্রদান করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, দ্বিতীয় শ্রেণীর টেকনিক্যাল শিক্ষক পদে নতুন নিয়োগের ক্ষেত্রে ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং এ প্রথম বিভাগের জন্য একটি অগ্রিম বর্ধিত বেতন এবং প্রথম শ্রেণীর পদে নতুন নিয়োগের ক্ষেত্রে ইঞ্জিনিয়ারিং এ প্রথম শ্রেণীর জন্য একটি অগ্রিম বর্ধিত বেতন এবং এমএসসি ডিগ্রির জন্য দুটি অগ্রিম বর্ধিত বেতনের সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। প্রথম শ্রেণীর নন-টেকনিক্যাল শিক্ষক পদে নতুন নিয়োগের ক্ষেত্রে অনার্স এবং মাস্টার্স প্রত্যেক ক্ষেত্রে প্রথম শ্রেণীর জন্য একটি করে অগ্রিম, বর্ধিত বেতন এবং ডক্টরেট ডিগ্রির জন্য তিনটি অগ্রিম বর্ধিত বেতনের সুবিধা দেয়া হচ্ছে।

নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, দ্বিতীয় শ্রেণীর পদের জন্য ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রিতে প্রথম শ্রেণীর জন্য একটি এবং ডিপ্লোমা-ইন-টেকনিক্যাল এডুকেশন ডিগ্রির জন্য একটি করে অগ্রিম বর্ধিত বেতন প্রদান করা হচ্ছে। তৃতীয় শ্রেণীর নন-টেকনিক্যাল শিক্ষক পদে নতুন নিয়োগের ক্ষেত্রে অনার্স প্রথম শ্রেণীর জন্য দুটি, দ্বিতীয় শ্রেণীর জন্য একটি করে এবং মাস্টার্স এর জন্য দুটি করে অগ্রিম বর্ধিত বেতনের সুবিধা রয়েছে। এ ছাড়া বিজ্ঞান বিষয়ে ডিগ্রির জন্য একটি অগ্রিম বর্ধিত বেতন প্রদান করা হচ্ছে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষকতা পেশায় আকৃষ্ট করার জন্য দেশে বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে বিশেষ নজর দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে গাজীপুরে ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি নামে একটি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য আইন প্রণয়নের কাজ চলছে। মেধাবীদের শিক্ষকতায় আকৃষ্ট করতে এ আইনে একটি পৃথক বেতন কাঠামোর প্রস্তাব করা হয়েছে। উচ্চ শিক্ষা গবেষণা খাতে বছরে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা শিক্ষক-গবেষকদের অনুকূলে ছাড় করা হচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, শিক্ষকদের জন্য বিভিন্ন ফেলোশিপ প্রোগ্রাম রয়েছে। এসব প্রোগ্রামের আওতায় শিক্ষকরা দেশে-বিদেশে তাদের উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের প্রতিবছর দেশে ও বিদেশে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ দিতে তাদের সবেতনে ছুটি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে প্রথমবারের মত বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারীদের এমপিওর অর্থ সরকার ঘোষিত নতুন পে-স্কেলে আপগ্রেড করা হয়েছে। যার ফলে আগের তুলনায় প্রত্যেক শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন প্রায় শতকরা ৪০ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে। বেসরকারি কলেজ ও স্কুলের শিক্ষকদের মতো মাদ্রাসা শিক্ষকদের বেতন স্কেল ও মর্যাদা সমতাকরণ করা হয়েছে।

Source: http://www.kalerkantho.com/online/national/2014/11/13/150595














0 comments:

Post a Comment