Showing posts with label সংবাদ. Show all posts
Showing posts with label সংবাদ. Show all posts

Saturday, October 17, 2015

ভর্তি পরীক্ষা নেবে না শিক্ষক সমিতি

শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো ও অষ্টম জাতীয় বেতন কাঠামো পুনর্নির্ধারণের দাবিতে ভর্তি পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। তবে এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মো. খবির উদ্দিন।
এ ছাড়া শিক্ষক লাঞ্ছনার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল হোসেন ওরফে দীপুকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিতে উপাচার্যকে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছে শিক্ষক সমিতি।
আজ শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বিকেল তিনটা পর্যন্ত জহির রায়হান মিলনায়তনের সেমিনার কক্ষে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে এই দুটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
সমিতির কার্য নির্বাহী পরিষদের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগামী ২৫ অক্টোবর থেকে দুই নভেম্বর পর্যন্ত ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। কিন্তু আজ সমিতির সভায় এই পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
অধ্যাপক খবির বলেন, সভায় ভর্তি পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে—এটা ঠিক। কিন্তু আমরা দ্রুত সমিতির জরুরি সভা ডেকে এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার চেষ্টা করব।
এ দিকে শিক্ষকদের বিরোধিতা উপেক্ষা করে ফয়সালকে রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে দেওয়া নিয়োগ, বাতিলের দাবিতে উপাচার্যকে সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে নিয়োগ বাতিল করা না হলে ১৯ অক্টোবর থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করা হবে বলে জানিয়েছেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার।
গত ১৩ জুলাই পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটির আগে শেষ কর্মদিবসে চার ছাত্রলীগ নেতাসহ ছয়জনকে অ্যাডহক (অস্থায়ী) ভিত্তিতে নিয়োগ দেন উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম। ওই দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে ফয়সালকে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে ২০১৩ সালে উপাচার্য বিরোধী আন্দোলন চলাকালে শিক্ষকদের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ রয়েছে। ফলে নিয়োগ পেলেও শিক্ষকদের বিরোধিতার মুখে তিনি কাজে যোগ দিতে পারেননি।
এরপর গত ২৩ আগস্ট তাঁর ওই নিয়োগ বাতিল করে রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে পুনরায় তাঁকে অ্যাডহক ভিত্তিক নিয়োগ দেন উপাচার্য। এরপর থেকেই শিক্ষকেরা তাঁর নিয়োগ বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছিলেন।

Published in: http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/657562

Tuesday, October 13, 2015

আন্দোলনে যাচ্ছে ২৬টি ক্যাডার - সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল দাবি


নতুন বেতন কাঠামোতে সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল বহাল রাখার দাবিতে আন্দোলনে যাচ্ছে ২৬টি ক্যাডার সমন্বয়ে গঠিত বিসিএস সমন্বয় কমিটি। কার্যকর আন্দোলন করার জন্য ২০ অক্টোবরের মধ্যে সমন্বয় কমিটির উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় কমিটি পুনর্গঠন করা হবে। গত সোমবার কমিটির জরুরি সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন। সমন্বয় কমিটির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সর্বস্তরে কর্মচারীদের দাবি উপেক্ষা করে সরকার সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল বাদ দিয়ে নতুন বেতন কাঠামোর প্রজ্ঞাপন জারি করলে সরকার বিপাকে পড়বে। দেশের সব অফিসে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়বে। বিশেষ একটি ক্যাডার সরকারকে এভাবে বেকায়দায় ফেলতে চাচ্ছে।

সোমবারের সভায় বলা হয়, কর্মকর্তাদের মধ্যে ৯৮ দশমিক ৬৫ ভাগই চতুর্থ থেকে নবম গ্রেডে অবস্থান করেন। এর বেশির ভাগ কর্মকর্তা মাঠপর্যায়ের সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচির সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে সংশ্লিষ্ট। বেতন স্কেল, ২০১৫-এর মাধ্যমে এসব কর্মকর্তার মর্যাদাহানি এবং তাঁদের আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে।

গত সোমবার গণপূর্ত অধিদপ্তরের সভাকক্ষে বিসিএস সমন্বয় কমিটির যে জরুরি সভা হয় তাতে সমন্বয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রকৌশলী কবির আহমেদ ভূঁইয়া সভাপতিত্ব করেন। এতে সমন্বয় কমিটির সহসভাপতি ডা. মুশতাক হোসেন, মহাসচিব ফিরোজ খান, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক মাসুমে রব্বানী, সমাজকল্যাণ সম্পাদক ড. জি এম ফারুক ডন, প্রচার সম্পাদক স ম গোলাম কিবরিয়া, বন ক্যাডারের সভাপতি মো. ইউনুস আলী, কৃষি ক্যাডারের সভাপতি তাসাদ্দেক আহমেদ, মহাসচিব মো. খায়রুল আলম প্রিন্স, সড়ক ও জনপথ ক্যাডারের সাধারণ সম্পাদক মো. আমান উল্লাহ, স্বাস্থ্য ক্যাডারের সভাপতি ড. আ ম সেলিম রেজা, ইকোনমিক ক্যাডারের মহাসচিব আফরোজা মোয়াজ্জেম, সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের সভাপতি অধ্যাপক নাসরিন বেগম, মহাসচিব আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার, কর ক্যাডারের ফজলুল হক, তথ্য বেতার ক্যাডারের সায়েদ মোস্তফা কামাল, মৎস্য ক্যাডারের মহাসচিব মজিবুর রহমান, প্রাণিসম্পদ ক্যাডারের সভাপতি মো. মাহবুব আলম ফারুক, গণপূর্ত ক্যাডারের মহাসচিব এ কে এম মনিরুজ্জামানসহ সমন্বয় কমিটি ও বিভিন্ন ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে।

সভায় উপজেলা পর্যায়ের সেলফ ড্রয়িং অফিসারদের বেতন-ভাতা বিলে ইউএনওর স্বাক্ষরের সিদ্ধান্ত বাতিলেরও জোর দাবি জানানো হয়। বলা হয়, এ সিদ্ধান্ত গণতন্ত্রের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। ইউএনওসহ উপজেলা কর্মকর্তাদের কার্যক্রম পরিবীক্ষণ ও দায়বদ্ধতা নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে ন্যস্ত করার দাবি করেন তাঁরা।

পরীক্ষা বর্জনের সিদ্ধান্ত স্থগিত জগন্নাথ শিক্ষক সমিতির


Published in: http://bangla.bdnews24.com/bangladesh/article1039877.bdnews

Monday, October 12, 2015

মন্ত্রী-আমলাদের জন্য ১০৯২টি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট

রাজধানীর বেইলি রোডে মন্ত্রী ও মিরপুরে আমলাদের জন্য ১ হাজার ৯২টি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট তৈরি করবে সরকার। এজন্য ব্যয় হবে ৯৬৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে মন্ত্রীদের জন্য ২৮টি এবং সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জন্য ৮৫২ কোটি টাকা ব্যয়ে ১ হাজার ৬৪টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে। আজ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ সংক্রান্ত দুটি আলাদা প্রকল্প অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করার কথা। নতুন অর্থবছরে এসব ফ্ল্যাট নির্মাণের কাজ শুরুর পরিকল্পনা করছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। জানা গেছে, গত কয়েক বছরে মন্ত্রিপরিষদের আকার অনেক বড় হয়েছে। সে ধারাবাহিকতায় মন্ত্রীপাড়ায় আবাসন সুবিধা বাড়ানো সম্ভব হয়নি। ফলে মন্ত্রীদের জন্য নির্ধারিত আবাসন ব্যবস্থা অপ্রতুল রয়েই গেছে। এ কারণেই মূলত ২৮টি ফ্ল্যাট বিলাসবহুল নির্মাণ করা হচ্ছে। ২০১৮ সালের জুনের মধ্যে এ ফ্ল্যাটগুলো নির্মাণের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারি বাসা সংকট সমাধানে বেইলী রোডে মন্ত্রীদের জন্য প্রস্তাবিত ভবনের নাম হবে মিনিস্টার্স অ্যাপার্টমেন্ট-৩। ১৫ তলাবিশিষ্ট ভবনের অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জায় সরকারি কর্মকর্তাদের তুলনায় একটু বেশি ব্যয় হবে। এসব ফ্ল্যাটের আকার সাড়ে তিন হাজার বর্গফুটের। এছাড়া সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য নির্মিতব্য ফ্ল্যাটের আকার হবে সাড়ে ১২শ থেকে দেড় হাজার বর্গফুট। ১৫টি বহুতল ভবনে এসব আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে। এগুলোর কোনো কোনোটির উচ্চতা ২০ তলা পর্যন্ত। ঢাকা শহরে অবস্থানরত সাড়ে তিন লাখের বেশি সরকারি চাকরিজীবীর জন্য প্রকল্পগুলো যথেষ্ট নয়। কারণ রাজধানীতে বসবাসকারী ১৫ হাজার সরকারি চাকরিজীবীর আবাসনের ব্যবস্থা রয়েছে। এ ফ্ল্যাটগুলো নির্মাণ হলে আরও প্রায় এক হাজার ৬০০ জনের আবাসনের ব্যবস্থ্যা হবে, যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। এ বিষয়ে জানতে চাইলে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মঈনুদ্দিন আবদুল্লাহ বলেন, মন্ত্রী ও সরকারি কর্মকর্তাদের আবাসন সংকট রয়েছে। সেটি দূর করার জন্য কয়েকটি প্রকল্প হাতে নেয়া হচ্ছে। যা অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, দেড় হাজারেরও বেশি ফ্ল্যাট নির্মাণ হলে মন্ত্রী ও সরকারি কর্মকর্তাদের আবাসন সংকট কিছুটা কমবে।

এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য আরাস্তু খান বলেন, মন্ত্রী ও সরকারি কর্মকর্তাদের আবাসন সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। বিষয়টি সরকারের সবপর্যায়ে অবগত আছে। এজন্য পরিকল্পনা কমিশনের অনুমোদনের পাইপলাইনে কয়েকটি প্রকল্প আছে। এর মধ্যে মন্ত্রী ও সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণ সংক্রান্ত প্রস্তাব রয়েছে। এসব প্রস্তাব একনেকের সভায় অনুমোদনের জন্য খুব শিগগিরই উপস্থাপন করা হতে পারে।

উল্লেখ্য, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনে সংসদ সচিবালয়ে কর্মরতদের জন্য ৪৪৮টি ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এর আগে ২০০৯ সালে ঢাকা শহরের সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ৪০৮টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করে সংস্থাটি।
Published in: http://www.jugantor.com/current-news/2015/10/13/336430

Sunday, October 11, 2015

চূড়ান্ত অনুমোদন পেল বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়

চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে দেশের প্রথম ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়। তথ্য ও যোগাযোগ শিক্ষার মাধ্যমে দেশের উন্নয়নকে আরও বেগবান করতে দেশে প্রথমবারের মতো বিশেষায়িত এই ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়টি করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়টি গাজীপুরের হাইটেক পার্ক এলাকায় স্থাপিত হবে।

এ লক্ষ্যে সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় আইন চূড়ান্ত অনুমোদন পায়। এর আগে গত ২৯ ডিসেম্বর নীতিগতভাবে আইনটি পাস হয়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা এ কথা জানান।

খসড়া নীতিমালায় প্রস্তাবিত নাম ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় থাকলেও মন্ত্রিসভার সদস্যরা এর নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় করার প্রস্তাব দেন।

জানা গেছে, আইসিটি শিক্ষার গুণগত উৎকর্ষের মাধ্যমে উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত করাই এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য।

সচিব বলেন, এটি একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হবে। তবে এটি মূলত হবে বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে তথ্য প্রযুক্তি ও যোগাযোগ প্রযুক্তি শিক্ষাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হবে। প্রস্তাবে ট্রেজারার না রাখার কথা থাকলেও সেই পদও রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। 

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা বা গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে নিয়োগ আকর্ষণীয় করতে বেতন ও অন্যান্য সুবিধার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হবে। পাশাপশি এখানে প্রথাগত শিক্ষার পাশাপাশি দূরশিক্ষণ ও অনলাইন শিক্ষার ব্যবস্থা থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনায় একাডেমিক কাউন্সিলে আইসিটি খাতের ব্যক্তিরা থাকবেন। থাকবেন এ খাতের উদ্যোক্তারা। একাডেমিক কাউন্সিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মনোনীত দুজন আইসিটি শিল্প উদ্যোক্তা থাকবেন।

Published in: http://www.jagonews24.com/national/news/56917

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি সাধারন সভার সিদ্ধান্তসমূহ

আজ ১২/১০/২০১৫ তারিখ সোমবার বিকাল ৩:০০ ঘটিকায় বিশ্বাবিদ্যালয়ের সাইন্স বিল্ডিং এ শিক্ষক সমিতির এক সাধারন সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় ৮ম জাতীয় বেতন কাঠামো সম্পর্কে আলোচনা হয়। শিক্ষক সমিতির সাধারন সম্পাদক আমিনুল ইসলাম সজিব স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি মারফত এ তথ্য জানা যায়।

আলোচনার শুরুতে শিক্ষকগন ৮ম জাতীয় বেতন কাঠামো প্রনয়নের জন্য বর্তমান সরকার ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান।কিন্তু ৮ম জাতীয় বেতন কাঠামোতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকবৃন্দের মর্যাদাহানি হয়েছে বলে সকলে মনে করেন। উপস্থিত শিক্ষকবৃন্দ মনে করেন যে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকবৃন্দের মর্যাদার সংগে দেশ ও জাতীর ভবিষ্যত জড়িয়ে আছে। তাই মর্যাদার প্রশ্নে তারা ছাড় দিতে রাজি নন। তাই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকগনের স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো প্রনয়নের জন্য তারা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন। চলমান আন্দোলনকে সফল করার লক্ষে জাককানবি শিক্ষক সমিতি নিম্নলিখিত সিদ্ধান্ত সমুহে একমত হনঃ 

১। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকগনের জন্য সম্মান জনক স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো প্রনয়নের দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নেয়া পদক্ষেপের সঙ্গে নীতিগত একাত্মতা প্রকাশ ও সমর্থন জানানো হয়।

২। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি কে ফেডারেশন হতে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জন্য শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন নেতৃবৃন্দের প্রতি আহবান জানানো হয়।

৩। জাককানইবি শিক্ষক সমিতির কার্যকরি পরিষদ, নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করার জন্য, চলমান আন্দোলন এবং অন্যান্য বিষয়ে মতবিনিময়ের জন্য শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের নের্তৃবৃন্দের সঙ্গে ঢাকায় একটি বৈঠক করবে মর্মে সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। এ নিমিত্তে জাককানইবি শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের নের্তৃবৃন্দের সঙ্গে পূর্বেই যোগাযোগ করে সময় নির্ধারণ করবে।

৪। ৩১ শে অক্টোবরের পুর্বে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের দাবি সমূহ উপেক্ষা করে যদি কোন গেজেট প্রকাশ হয় তবে, তা প্রকাশের পরের কার্যদিবস হতে জাককানইবি শিক্ষকগন লাগাতার সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করবেন।

৫। যদি ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৫ এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকগনের এই যৌক্তিক দাবিসমূহ মেনে নেয়া না হয় তবে, ১লা নভেম্বর হতে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের ডাকে একাত্ম হয়ে আন্দোলন কর্মসূচী পালন করবেন। তবে বিষয়টির সুরাহা না হলেও যদি বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন ১লা নভেম্বর হতে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচী ঘোষণায় ব্যর্থ হয়, জাককানইবি শিক্ষক সমিতি ২রা নভেম্বর হতে লাগাতার সর্বাত্মক কর্মবিরতি সহ আরো অন্যান্য কর্মসূচী পালন করবে। 

৬।৮ম বেতন কাঠামোতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকগনের অবনমনের প্রতিবাদে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত জাককানইবি শিক্ষকগন কালো ব্যাচ ধারণ করে স্বাভাবিক কার্যক্রমে অংশগ্রহন করবে।

Friday, October 9, 2015

রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রীর বেতন প্রায় দ্বিগুণ হচ্ছে

রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের বেতন বাড়ছে প্রায় দ্বিগুণ হারে। সঙ্গে বাড়ছে তাঁদের বিভিন্ন ভাতাও। গত মাসে সরকারি কর্মচারীদের বেতন বাড়িয়ে প্রায় দ্বিগুণ করা হয়েছে। সরকারি কর্মচারীদের বেতন মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর গেজেট হলেই চলে। তবে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ অন্য মন্ত্রীর মতো গুরুত্বপূর্ণ পদের বেতন বাড়াতে হলে আইন সংশোধন করতে হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এখন সংশ্লিষ্ট আইনগুলো সংশোধন করে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ অন্য মন্ত্রীদের বেতন বাড়ানোর প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করেছে। এ-সংক্রান্ত একটি সারসংক্ষেপ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এরই মধ্যে অনুমোদন করেছেন।

মন্ত্রিপরিষদসচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা কালের কণ্ঠকে বলেন, 'নতুন পে স্কেলের পর মন্ত্রীদেরও বেতন-ভাতা বৃদ্ধি পায়। এটাই রেওয়াজ। তারই ধারাবাহিকতায় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।'

রাষ্ট্রপতির বেতন বাড়ানোর জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ 'দ্য প্রেসিডেন্ট'স (রেম্যুনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজেস) অ্যাক্ট ১৯৭৫', প্রধানমন্ত্রীর বেতন বাড়ানোর জন্য 'দ্য প্রাইম মিনিস্টার'স (রেম্যুনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজেস) অ্যাক্ট, ১৯৭৫' আর মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের বেতন বাড়ানোর জন্য 'দ্য মিনিস্টার'স, মিনিস্টার'স অব দ্য স্টেট অ্যান্ড ডেপুটি মিনিস্টার'স (রেম্যুনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজেস) অ্যাক্ট, ১৯৭৩' সংশোধনের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করেছে। সরকারি কর্মচারীদের নতুন বেতন কাঠামোর গেজেট প্রকাশের পর একই দিনে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকার, ডেপুটি স্পিকারের বেতন এবং সংসদ সদস্যদের সম্মানী বাড়ানোর প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের জন্য উত্থাপন করা হবে। এর আগে ২০০৯ সালে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের বেতন বাড়ানো হয়েছিল।

কার কত বাড়ছে : রাষ্ট্রপতির বর্তমান মূল বেতন ৬২ হাজার ২০০ টাকা। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সারসংক্ষেপ অনুযায়ী, তাঁর মূল বেতন ৮৩ শতাংশ বাড়িয়ে এক লাখ ১২ হাজার টাকা করা হচ্ছে। এর সঙ্গে যোগ হবে অন্যান্য ভাতা। প্রধানমন্ত্রীর বর্তমান মূল বেতন ৫৮ হাজার ৬০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে এক লাখ পাঁচ হাজার ২০০ টাকা হচ্ছে। মন্ত্রীদের বর্তমান মূল বেতন ৫৩ হাজার ১০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯৭ হাজার ২০০ টাকা, প্রতিমন্ত্রীদের মূল বেতন ৪৭ হাজার ৮০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮৭ হাজার ৫০০ টাকা এবং উপমন্ত্রীদের মূল বেতন ৪৫ হাজার ১৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮৬ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া তাঁদের বাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ, দৈনন্দিন ভাতা, যাতায়াত ভাতাসহ অন্যান্য ভাতাও বাড়ানো হচ্ছে। এর মধ্যে বর্তমানে সচিবদের দৈনন্দিন ভাতা (ডিএ) মন্ত্রীদের চেয়ে বেশি। এর আগে এটি সংশোধন করে মন্ত্রীদের ডিএ বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। প্রধানমন্ত্রী তাতে আপত্তি করায় তখন তা হয়নি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান মন্ত্রিসভায় ৩১ জন মন্ত্রী, ১৮ জন প্রতিমন্ত্রী ও দুজন উপমন্ত্রী রয়েছেন। আর মন্ত্রী পদমর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা রয়েছেন পাঁচজন।

প্রক্রিয়া চলছে আরো : মন্ত্রিসভার সদস্য, জাতীয় সংসদের স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের বেতনের সঙ্গে জাতীয় সংসদের ৩৫০ জন সদস্যের (এমপি) সম্মানী বাড়ানোর প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। সংসদ সদস্যদের সম্মানী বাড়ানোর কাজ করছে সংসদ সচিবালয়। এ ছাড়া বিভিন্ন সাংবিধানিক সংস্থাও নিজেদের চেয়ারম্যান, সদস্যসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দিষ্ট হারে বেতন বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে বলে সরকারের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানিয়েছেন। বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান ও সদস্যদের বেতন বাড়ানোর জন্য এ-সংক্রান্ত আইনটি সংশোধনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে পিএসসি সচিবালয়। বিচারকদের বেতন বাড়ানোর প্রক্রিয়াও চলমান রয়েছে বলে সম্প্রতি কালের কণ্ঠকে জানিয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাহবুব আহমেদ।

পে স্কেল পুনর্নির্ধারণের (ফিক্সেশন) কাজ চলছে গত মাসে সরকারি কর্মচারীদের বেতন কাঠামো অনুমোদনের সময় সচিবদের বেতন বাড়ানো হয়েছে সর্বনিম্ন ৯৫ শতাংশ। ওই সময় ২০ নম্বর গ্রেডভুক্ত কর্মচারীদের বেতন বাড়ানো হয়েছে সর্বোচ্চ ১০১.২৩ শতাংশ। বর্ধিত বেতন গত জুলাই থেকে কার্যকর করা হলেও কর্মচারীরা এখনো পুনর্নির্ধারিত হারে বেতন পাচ্ছেন না। বর্তমানে তাঁদের বেতন ফিক্সেশনের কাজ করছে অর্থ মন্ত্রণালয়। আগামী মাসে তাঁরা বকেয়া বেতনসহ বর্ধিত হারের বেতন উত্তোলন করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। তাঁরা জানান, নতুন বেতন কাঠামোর গেজেট জারির সব প্রক্রিয়া প্রায় সম্পন্ন হয়ে আছে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত পেরু থেকে আগামী ১৬ অক্টোবর দেশে ফেরার পর রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে এ মাসের শেষেই এর গেজেট জারি হতে পারে। আর গেজেট জারির পর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতায় কোনো বৈষম্য দেখা দিলে তা পর্যালোচনা করতে বৈঠক করবে অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন বেতন বৈষম্য দূরীকরণ সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।

চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্তরাও নতুন বেতন স্কেল পাবেন : বিধিবিধান পরিবর্তনের নির্দেশ চুক্তিভিত্তিক নিয়োজিত কর্মকর্তারাও নতুন পে স্কেলের সুবিধা পাবেন। এমনকি পে স্কেল বাস্তবায়নকালে যাঁদের পিআরএল বাতিল করে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হবে তাঁরাও এ সুবিধা পাবেন। অর্থ মন্ত্রণালয় বলেছে, যেসব কর্মকর্তা নতুন বেতন স্কেল কার্যকরের সময় জনস্বার্থে পিআরএল বাতিলের শর্তে সরকারি পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োজিত থাকবেন, তাঁদের বিশেষ বিবেচনায় নতুন পেনশন ও আনুতোষিক গ্রহণের সুযোগ দিতে হবে। গত সপ্তাহে অর্থ মন্ত্রণালয় এ-সংক্রান্ত বিধিবিধান পরিবর্তনের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছে। একই সঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয় এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা অবহিত হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে একবার এবং বাস্তবায়ন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত প্রতি মাসের ৪ তারিখের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ অধিশাখায় পাঠানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছে।

Published in: http://www.kalerkantho.com/print-edition/first-page/2015/10/10/277503

Wednesday, October 7, 2015

শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির কথা বিবেচনা করে জবি বি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা আগামীকাল অনুষ্ঠিত হবে

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির কথা বিবেচনা করে জবি বি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা আগামীকাল অনুষ্ঠিত হবে বলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে জবি শিক্ষক সমিত। এর আগে গতকাল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির এক জরুরী সাধারন সভায় আসন্ন প্রথম প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষায় ৩১ অক্টোবর ২০১৫ পর্যন্ত ভর্তি কার্যক্রমে অংশগ্রহন করবে না বলে সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছিল। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের মর্যাদা, স্বতন্ত্র পে-স্কেল, শিক্ষা ব্যাবস্থার উন্নয়ন ও উচ্চশিক্ষা কমিশন গঠনের দাবিতে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়েছিল।

তবে পরবর্তী পরীক্ষাসমূহ বর্জনের ব্যাপারে তারা এখনো অনড় অবস্থানে রয়েছেন।



আরো পড়ুনঃ
অক্টোবরে ভর্তি পরীক্ষা না নেয়ার সিদ্ধান্ত জবি শিক্ষক সমিতির

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা দুই ভাগ - ফেডারেশন-সমিতি মুখোমুখি, ফেডারেশন থেকে জগন্নাথকে বহিষ্কার

শরীফুল আলম সুমন

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সঙ্গে গত মঙ্গলবার বৈঠকের পর আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের নেতারা। এর মধ্যে দাবির পক্ষে ঘোষণা না এলে ১ নভেম্বর থেকে লাগাতার কর্মবিরতির হুমকিও দিয়ে রেখেছিল ফেডারেশন। কিন্তু এক দিন যেতে না যেতেই ফেডারেশনের বাইরে গিয়ে আলাদাভাবে কর্মসূচি ঘোষণা করল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। আরো কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ও ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চাচ্ছে না। শিগগিরই তারাও কর্মসূচি ঘোষণা করবে বলে জানা গেছে। এতে ফেডারেশন ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিগুলো মুখোমুখি অবস্থানের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। অথচ চলতি মাসের পুরোটাজুড়েই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষা। ফলে সেই পরীক্ষাও বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক নেতার সঙ্গে আলোচনা করে জানা যায়, ফেডারেশন তাদের মতো করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু সাধারণ শিক্ষকরা ফেডারেশনের এই নমনীয়তা মেনে নিতে চান না। তাই সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নেতাদের ওপরই চাপ বাড়ছে। ফলে ফেডারেশনের বাইরে গিয়েও কর্মসূচির চিন্তাভাবনা করছেন শিক্ষকরা।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, ফেডারেশনের গত মঙ্গলবারের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষকরা। ফলে গতকাল বুধবার জরুরি সভা আহ্বান করে শিক্ষক সমিতি। এতে প্রায় আড়াই শ শিক্ষক অংশ নেন। সবার মতামতের ভিত্তিতে আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত অনুষ্ঠেয় সব ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষকদের অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। আগামী শুক্রবারই 'বি' ইউনিটের পরীক্ষার মাধ্যমেই শুরু হওয়ার কথা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ভর্তি পরীক্ষা।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আবুল হোসেন গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'প্রত্যেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ই স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাও নিজস্ব। তাই আমাদের সাধারণ শিক্ষকরা যদি চান তাহলে আমাদের কর্মসূচি ঘোষণার অধিকার রয়েছে। ফলে সব শিক্ষকের সম্মতিক্রমেই ভর্তি পরীক্ষায় অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। শিক্ষকরা পরীক্ষা নেবেন না, তাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনই ঠিক করবে তারা কী করবে?'

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'এখনো আগামী শুক্রবারে অনুষ্ঠিতব্য ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত করে নাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কাল (আজ বৃহস্পতিবার) সকাল ১০টায় একাডেমিক কাউন্সিলের সভা আহ্বান করা হয়েছে।'

জানতে চাইলে ফেডারেশনের মহাসচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি আমাদের না জানিয়ে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এটা ফেডারেশনের নিয়মনীতিবহির্ভূত। তাই ফেডারেশন তাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।'

গতকাল রাতে ফেডারেশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও বহিষ্কারের এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের কার্যনির্বাহী পরিষদের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জানানো যাচ্ছে যে ফেডারেশনের শৃঙ্খলাবিরোধী কাজ করায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে ফেডারেশন থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হলো। আজ (গতকাল) থেকেই এটি কার্যকর হবে।

জানা যায়, ফেডারেশনের এই সিদ্ধান্তের পর ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন সাধারণ শিক্ষকরা। একই দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে এভাবে বহিষ্কার কারোই কাম্য নয় বলে জানান শিক্ষকরা।

নাম প্রকাশ না করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক নেতা বলেন, 'ফেডারেশনের কয়েকজন নেতা তাঁদের নিজেদের মতো কর্মসূচি দিতে চান। সাধারণ শিক্ষকদের মতামতের মূল্য তাঁরা ঠিকমতো দেন না। অথচ সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি নিয়েই এই ফেডারেশন। আসলে ফেডারেশনের কয়েকজন নেতা এমনভাবে চলতে চান, যাতে সরকারের সঙ্গে তাঁদের সুসম্পর্ক নষ্ট না হয়।'

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক দুলাল নন্দী চন্দ্র গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমরাও পৃথক কর্মসূচির ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করছি। শিক্ষকদের পদমর্যাদার যেভাবে অবনমন করা হয়েছে সেটা অশনিসংকেত। আসলে শিক্ষাকেই অবনমন করতে একটা গোষ্ঠী এজেন্ডা নিয়ে নেমেছে। তবে এখনো প্রধানমন্ত্রী আমাদের শেষ ভরসা। কিন্তু দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে আমাদেরও বিকল্প চিন্তা করতে হবে। ১১ অক্টোবর আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় খুলবে। এরপর সাধারণ সভা আহ্বান করে কর্মসূচির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।'

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক খসরুল আলম কুদ্দুছী গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমরা ইতিমধ্যে সাধারণ শিক্ষকদের মতামত চেয়ে চিঠি দিয়েছি। সরকারের এই আচরণে আমরা খুবই মর্মাহত। ফেডারেশনের বাইরে কর্মসূচি দেব কি না তা সাধারণ শিক্ষকদের ওপরই নির্ভর করবে। জগন্নাথের শিক্ষকদের স্বতঃস্ফূর্ততার কারণেই তাঁরা এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছেন। সাধারণ শিক্ষক হিসেবে আমি তাঁদের এই সিদ্ধান্তকে স্যালুট করি।'

ফেডারেশনের সহসভাপতি ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা গতকাল বলেন, 'শিক্ষকদের আন্দোলন অবশ্যই লিগ্যাল। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তাই তাদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে কিছুটা হলেও এই আন্দোলন এগিয়ে নিয়ে যাওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।'

ফেডারেশনের অন্য সহসভাপতি ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক খবির উদ্দিন গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমাদের দাবির পক্ষে সুস্পষ্ট ঘোষণা না আসলে আগামী ১ নভেম্বর থেকে ৩৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে লাগাতার কর্মবিরতিতে যাওয়ার যে কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে এর চেয়ে বড় কর্মসূচি তো হতে পারে না। তবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি হয়তো তাদের সাধারণ শিক্ষকদের ম্যানেজ করতে পারেনি। কিন্তু আমরা পেরেছি। তাই ফেডারেশনের বাইরে কিছু করছি না।'

গত মঙ্গলবার শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সঙ্গে বৈঠকে শিক্ষক নেতারা পাঁচ দফা প্রস্তাব পেশ করেছেন। এগুলো হচ্ছে- বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের স্বতন্ত্র বেতন স্কেলের জন্য বেতন কমিশন; স্বতন্ত্র বেতন স্কেল বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত ঘোষিত অষ্টম বেতন কাঠামো পুনর্নির্ধারণ, ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সে (পদমর্যাদা ক্রম) শিক্ষকদের প্রত্যাশিত বেতন কাঠামো অনুযায়ী পদমর্যাদা নিশ্চিতকরণ এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তাদের অনুরূপ সুযোগ-সুবিধা শিক্ষকদের ক্ষেত্রেও নিশ্চিতকরণ।

ঢাবির সাদা দলের বিবৃতি : বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমাজ এবং তাঁদের চলমান আন্দোলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রসঙ্গে গতকাল বিবৃতি দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিএনপি সমর্থিত শিক্ষক সংগঠন সাদা দল। সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. আমিনুর রহমান মজুমদার ও অধ্যাপক ড. মো. সিরাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, 'অষ্টম জাতীয় বেতন কাঠামোতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের গ্রেড অবনমন এবং তাঁদের মর্যাদাহানির প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের চলমান আন্দোলন এবং শিক্ষকদের সম্পর্কে গত ৪ অক্টোবর গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মাননীয় প্রধানন্ত্রীর বক্তব্যে আমরা বিস্মিত, লজ্জিত ও হতাশ। তাঁর এ অপ্রত্যাশিত ও অনাকাঙ্ক্ষিত বক্তব্যে গোটা শিক্ষক সমাজ অপমানিত ও মর্মাহত হয়েছে।'


Published in: http://www.kalerkantho.com/print-edition/first-age/2015/10/08/276775

Tuesday, October 6, 2015

সিদ্ধান্ত ছাড়াই শে​ষ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীর বৈঠক

পৃথক বেতন কাঠামো ও অষ্টম জাতীয় বেতন স্কেলে গ্রেড সমস্যা নিরসনের দাবিতে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষকদের বৈঠক কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষে হলো। আজ মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বেলা সাড়ে তিনটা থেকে দেড় ঘণ্টার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক শেষে শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষা পরিবারের সদস্য হিসেবে তিনি শিক্ষ​কদের দাবির বিষয়গুলো শুনেছেন। এখন তিনি এগুলো বেতন বৈষম্য নিরসন সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির কাছে উপস্থাপন করবেন। মন্ত্রী আরও বলেছেন, শিক্ষকদের মান মর্যাদা যাতে অক্ষুণ্ন থাকে তা তিনি চেষ্টা করবেন। তাঁর কাছে শিক্ষকদের মান অনেক ওপরে। কারণ শিক্ষাটা নির্ভর করে শিক্ষকদের মান মর্যাদার ওপর।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, এই মাসের মধ্যে ​তাঁরা কোনো কর্মসূচি দেননি। ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে। কিন্তু এ মাসের মধ্যে দৃশ্যমান কিছু না হলে তাঁদের ওপর ১ নভেম্বর থেকে লাগাতার কর্মসূচির চাপ আছে। তবে আশা করেন তা করতে হবে না।

আর ফেডারেশনের মহাসচিব এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেছেন, ৩০ অক্টোবরের মধ্যে দাবি মানা না হলে ১ নভেম্বর থেকে লাগাতার কর্মবিরতি​ দেওয়া সিদ্ধান্ত হয়েছে ফেডারেশনের সভায়। ​

বেলা তিনটায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও আধঘণ্টা পরে শুরু হয় এ বৈঠক। আন্দোলনরত শিক্ষকদের ১৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এতে যোগ দেন।

বৈঠকের শুরুতেই শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, শিক্ষকদের দাবি সরকার ‘আমলে’ নিয়েছে। এ জন্য বেতন বৈষম্য নিরসন সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি পুনর্গঠন করা হয়েছে। শিগগিরই এ কমিটির সভা হবে। সেখানে শিক্ষকদের এ দাবির বিষয়টি যাতে কার্যকরভাবে উপস্থাপন করা যায়, সে জন্যই আজকের আলোচনা হচ্ছে।
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, যেহেতু সরকার শিক্ষকদের এই দাবি আমলে নিয়ে কমিটি করেছে, সে জন্য তাঁদের প্রতি আহ্বান, তাঁরা যেন শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনের কোনো ক্ষতি না করেন।

এ সময় শিক্ষকেরা মন্ত্রীর কাছে একটি লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন। এতে তাঁরা শিক্ষকদের জন্য অবিলম্বে একটি আলাদা বেতন কমিশন গঠনের দাবি জানান। এ দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত অষ্টম বেতন কাঠামো পুনর্নির্ধারণ করে জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকদের বেতন-ভাতা গ্রেড-১, অধ্যাপকদের গ্রেড-২, সহযোগী অধ্যাপকদের গ্রেড-৩, , সহকারী অধ্যাপকদের গ্রেড-৫ এবং প্রভাষকদের গ্রেড-৭ নির্ধারণের দাবি জানান তাঁরা।

পৃথক বেতন কাঠামো ও গ্রেড সমস্যা নিরসনের দাবিতে প্রায় চার মাস ধরে আন্দোলন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। এর মধ্যে সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল বাদ দিয়ে গত ৭ সেপ্টেম্বর অষ্টম জাতীয় বেতন স্কেল অনুমোদন করে মন্ত্রিসভা। এরপর শিক্ষকদের আন্দোলন আরও জোরদার হয়। এরই মধ্যে গত রোববার গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী আন্দোলনরত শিক্ষকদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

Source: http://goo.gl/RlNH03

সরকারকে অক্টোবর পর্যন্ত সময় দেবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা


পৃথক বেতন কাঠামো ও অষ্টম জাতীয় বেতন স্কেলে গ্রেড সমস্যা নিরসনে সরকারকে অক্টোবর পর্যন্ত সময় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আন্দোলনরত সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। এ সময়ের মধ্যে সমাধান না হলে ১ নভেম্বর থেকে শিক্ষকেরা লাগাতার কর্মবিরতিতে যাবেন।

আজ মঙ্গলবার শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সঙ্গে বৈঠকে শিক্ষকেরা তাঁদের এসব সিদ্ধান্তের কথা জানাবেন। বেলা তিনটায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এ বৈঠক হবে। তাই বৈঠকে মন্ত্রীকে কী বলা হবে, তা নিয়ে বৈঠক করে এসব সিদ্ধান্ত নেন আন্দোলনে নেতৃত্ব দানকারী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের নেতারা।

ফেডারেশনের মহাসচিব এ এস এম মাকসুদ কামাল প্রথম আলোকে এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের কথাগুলো প্রধানমন্ত্রীকে বলার জন্য সময় চাইব। এ ছাড়া অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বাদে বেতন বৈষম্য নিরসন সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার কমিটির বাকি ছয় সদস্যের সঙ্গেও বৈঠকে বসা হবে। এ মাসের মধ্যে সম্মানজনক সমাধান না হয় আগামী ১ নভেম্বর থেকে লাগাতার কর্মবিরতিকে যাবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা।’

পৃথক বেতন কাঠামো ও গ্রেড সমস্যা নিরসনের দাবিতে প্রায় চার মাস ধরে আন্দোলন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। এর মধ্যে সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল বাদ দিয়ে গত ৭ সেপ্টেম্বর অষ্টম জাতীয় বেতন স্কেল অনুমোদন করে মন্ত্রিসভা। এরপর শিক্ষকদের আন্দোলন আরও জোরদার হয়। এরই মধ্যে গত রোববার গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী আন্দোলনরত শিক্ষকদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

Published in: http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/647731

Monday, October 5, 2015

প্রধানমন্ত্রীর ওপর শিক্ষকদের আস্থা রাখতে বললেন শিক্ষামন্ত্রী



আলাদা বেতন কাঠামোসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর আস্থা রাখতে বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি বলেছেন, শিক্ষকদের হতাশ বা উদ্বিগ্ন হয়ে ক্লাস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়ার মধ্যে যৌক্তিকতা নেই।
বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে আজ সোমবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন। বিশ্ব শিক্ষক দিবস ২০১৫ জাতীয় উদ্‌যাপন কমিটি এই সভার আয়োজন করে। 
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘মন্ত্রিপরিষদের বেতন সমতাকরণ কমিটির মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা চলছে। আপনাদের এই দাবি-দাওয়া পূরণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ওপর আস্থা রাখা উচিত।’ 
শিক্ষকদের প্রশংসা করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যারা শিক্ষা লাভ করে বড় বড় ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, কর্মকর্তা, বিচারপতি, রাষ্ট্রনায়ক হয়েছি, তার পেছনে আপনাদের অবদান অতুলনীয়। সে জন্য আমি আপনাদের আমাদের সবার পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। আমাদের সফলতার পেছনে আমাদের বাবা-মাসহ সমাজের অনেকের অবদান রয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে সবচেয়ে বড় অবদান এবং অতুলনীয় অবদান আমাদের শিক্ষকদের। তাঁরা হচ্ছেন আমাদের শিক্ষার মূল ও নিয়ামক শক্তি।’ 
উদ্‌যাপন কমিটির সমন্বয়ক অধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক রাশেদা কে চৌধূরী ও ইউনেসকোর ঢাকা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কিচি ওয়াসু। এ সময় উদ্‌যাপন কমিটির পক্ষ থেকে প্রিন্সিপাল ইব্রাহীম খাঁকে মরণোত্তর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক খালেদা ইকরাম, পরিবেশবিদ অধ্যাপক আতিক রহমান, আইএলও-এর পরামর্শক আব্দুর রফিক, অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষক জীবন কৃষ্ণ দে ও মাধ্যমিক শিক্ষক আল মাহমুদকে সম্মাননা দেওয়া হয়। 
এর আগে সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, শিক্ষা সম্পর্কিত বেসরকারি সংস্থা, বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংগঠনের অংশগ্রহণে একটি র‍্যালি বের হয়।

Published in: http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/647053/

তরুণদের মধ্যে শিক্ষক হবার প্রবণতা কতটা? - বিবিসি




গত দুই দশক ধরে জাতিসংঘের শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কোর উদ্যোগে পালিত হয়ে আসছে “বিশ্ব শিক্ষক দিবস”।
এ বছরের শ্লোগান – ‘শিক্ষকদের ক্ষমতায়ন: টেকসই সমাজ গঠন’।


বাংলাদেশে তরুণ তরুণীরা পড়ালেখা শেষ করে শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করতে কতোটা আগ্রহী?

দুজন চাকরি প্রত্যাশী তরুণ-তরুণী বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন চাকরি খুঁজলেও ‘শিক্ষক হবো’এমনটা তারা ভাবেননি কখনও।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়া শেষ করে চাকরি খুঁজছেন মিস তাসলিমা।



তিনি বলছিলেন “শিক্ষক হবার কথা ভাবিনি কখনও। স্বপ্নটা ছিল বড়। ছোটবেলা থেকে অন্য সব মানুষের মতো ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হবার কথাই মাথায় এসেছে সবসময়। আর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় বিসিএসের দিকেই ঝোঁকটা এসেছে”।

অন্যদিকে চাকরি প্রত্যাশী ইমাম হোসাইন বলছিলেন ডাক্তারি পেশার প্রতিই তার আগ্রহ ছিল সবসময়। যদিও তিনি এখন ব্যাংকের চাকরি খুঁজছেন।

এদের মতে, শিক্ষকতায় মেধাবীরা আসতে পারছেনা শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি হচ্ছে।

এর পাশাপাশি এ দুজন তরুণ-তরুণী মনে করছেন শিক্ষকদের মূল্যায়নও কম করা হয় ।

শিক্ষকদের বেতনভাতা, সামাজিক মূল্যায়নের বিষয়টি শিক্ষকতার দিকে না ঝুঁকার কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন তারা।

Published in: http://www.bbc.com/bengali/news/2015/10/151005_teachers_day_bd_young_discussion














Sunday, October 4, 2015

আমলারা প্রধানমন্ত্রীকে ভুল বুঝিয়েছেন - শিক্ষকদের অভিযোগ

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে 'মর্মাহত' বলে জানিয়েছেন একাধিক শিক্ষক নেতা। আমলারা প্রধানমন্ত্রীকে তাঁদের ব্যাপারে ভুল বুঝিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন তাঁরা। একই সঙ্গে সচিবদের ব্যাপারেও পাল্টা অভিযোগ করেছেন শিক্ষকরা। ৬৫ বছর চাকরির পরও একজন শিক্ষক নেতার কী সম্পদ থাকে আর ৫৯ বছর চাকরি করার পরও একজন আমলার কী সম্পদ থাকে, তা যাচাই করে দেখতে বলেছেন তাঁরা।

জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে যোগদান শেষে দেশে ফিরে গতকাল রবিবার গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, 'তাঁদের (শিক্ষকদের) চাকরির বয়স ৬৫ বছর আর সরকারি চাকরিজীবীদের বয়স ৫৯ বছর। এগুলো তো বিবেচনায় নিতে হবে। আজকে যেটা (স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো) নিয়ে আলোচনা করছে, সেটা নিয়ে আমারই তো প্রস্তাব ছিল। পিএসসির একটা আলাদা ইউনিট করে আমরা চাচ্ছিলাম...কিন্তু ওনারা আন্দোলন করছেন। তার মানে যে বেতন বাড়িয়েছি, নিশ্চয় তাঁরা বর্ধিত বেতন গ্রহণ করবেন না। যতক্ষণ পর্যন্ত সমাধান না হয়।'
শিক্ষকদের উদ্দেশ করে শেখ হাসিনা সাংবাদিকদের বলেন, 'ওনারা (শিক্ষকরা) সচিবদের সঙ্গে তুলনা করছেন। আচ্ছা সচিবরা কী কী সুবিধা পাচ্ছেন আর ওনারা কী কী ভোগ করছেন তার একটা তুলনামূলক চিত্র লেখেন না। কোনো সচিব কিন্তু অন্য কোথাও চাকরি করতে পারেন না। সেটা জানেন ভালো করে। কিন্তু আমাদের শিক্ষকরা পারেন। কোন ইউনিভার্সিটির কত শিক্ষক কোন প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে চাকরি করেন সে হিসাব কিন্তু আমার কাছে আছে।'
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'কথা নাই বার্তা নাই ওনারা (শিক্ষকরা) ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ করে দেবেন। কেন পড়াশোনা বন্ধ করবেন? শিক্ষকরা আন্দোলন করতে যাবেন কিসের জন্য? আর যদি করতে হয়, ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ করার রাইট তো তাঁদের নাই। আর আমরা যেটা নিজেরাই চিন্তাভাবনা করছি, এটা নিয়ে তাঁদের আন্দোলন করার দরকার ছিল না। আন্দোলন যখন করছেন, করতে থাকুন। এখানে আমার হস্তক্ষেপের কিছু নাই। তাঁরা আন্দোলন করছেন। বিষয়টি অর্থমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী দেখবেন। কমিটি করে দেওয়া হয়েছে, কমিটি দেখবে। কিন্তু আমি ওনাদের অনুরোধ করব, ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করবেন না।'
জানতে চাইলে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সহসভাপতি ও জাহাঙ্গীরনগর শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক খবির উদ্দিন গতরাতে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে আমরা মর্মাহত। আসলে আমলারাই প্রধানমন্ত্রীকে ভুল বুঝিয়েছেন। আমরা আমাদের সম্মান আর অস্তিত্বের প্রশ্নে আন্দোলন করছি। আসলে শিক্ষকদের সঙ্গে আমলাদের কখনো তুলনা হয় না। আমলাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা আর শিক্ষকদের শিক্ষাগত যোগ্যতার মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে। অনেক দেশেই শিক্ষকদের চাকরির কোনো বয়সসীমা নেই।'
ফেডারেশনের এই সহসভাপতি বলেন, 'আমলারা শিক্ষকদের চেয়ে অনেক বেশি কনসালট্যান্সি করেন। বছরে অনেকেই আট-দশবার বিদেশে যান। এমনকি তাঁরা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়েও ক্লাস নেন। আমি যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নিই, সেখানে একজন সচিবও ক্লাস নেন। আমরা গত মে মাস থেকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করছি। কিন্তু আমলাদের কারণে এখনো সেই সুযোগ পাইনি। আমাদের কথাটাই এখনো সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে জানাতে পারিনি। আগামী মঙ্গলবার শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের বৈঠক আছে এবং ফেডারেশনের সভা আছে। সুনির্দিষ্ট আশ্বাস না পেলে কঠোর কর্মসূচিতে না গিয়ে উপায় নেই।'
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আবুল হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী সর্বজন শ্রদ্ধেয়। কিন্তু তাঁর কথাগুলো ঠিকমতো স্টাডি করে বলা না। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নেন ঢাকার কিছু শিক্ষক। তা-ও সব বিষয়ের না। আর সেটা সর্বসাকল্যে ৩-৪ শতাংশের বেশি হবে না। আমরা ৬৫ বছর চাকরি করেও দরিদ্র থাকি। আর আমলারা ৫৯ বছর চাকরি করে আমাদের চেয়ে ধনী হন। আমরা কিভাবে জীবন যাপন করি আর আমলার কিভাবে জীবন যাপন করেন, এরও একটা স্টাডি হওয়া উচিত। তাহলেই প্রকৃত চিত্র বের হয়ে আসবে।'
ফেডারেশনের মহাসচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী হয়তো রাগের বশে এসব কথা বলেছেন। আমরা এখনো তাঁর (প্রধানমন্ত্রী) ওপরই ভরসা করছি। নতুন বেতন স্কেলে আমাদের পদের অবনমন বিষয়ে আন্দোলনে এখনো অনড় অবস্থানে আছি। আমাদের বিশ্বাস, প্রধানমন্ত্রীই আমাদের দেখবেন।'
এদিকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সঙ্গে আগামীকাল মঙ্গলবার আবারও বসবেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বিকেল ৩টায় ওই সভা অনুষ্ঠিত হবে বলে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। গতকাল সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রকল্প পরিচালকদের সঙ্গে এক বৈঠকের শুরুতে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সাংবাদিকদের বলেন, 'বেতন স্কেল নিয়ে সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে। শিক্ষকদের সঙ্গে এ বিষয়ে মঙ্গলবার বৈঠক রয়েছে।'
ফেডারেশনের মহাসচিব অধ্যাপক মাকসুদ কামাল বৈঠকের বিষয়ে বলেন, 'আমরা মূলত আমাদের দাবিগুলো পুনর্ব্যক্ত করব। ঈদের আগেই আমরা সুনির্দিষ্ট আশ্বাস চেয়েছিলাম; কিন্তু তা এখনো পাইনি। আমরা চাই সরকারকে সহযোগিতা করতে। একসঙ্গে যদি ৩৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে সরকারের ওপরই চাপ পড়বে। সেশনজট বাড়বে। ভর্তি পরীক্ষা বিঘ্নিত হবে, যা আমরা চাই না। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা এবং ওই দিনের ফেডারেশনের সভায়ই পরবর্তী কর্মসূচির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব।'
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো ঘোষণা এবং যত দিন তা না হয় তত দিন পদের অবনমনের অভিযোগে অষ্টম বেতন স্কেল পুনর্নির্ধারণের দাবিতে চার মাস ধরে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষকরা। বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মবিরতিসহ নানা কর্মসূচিও পালন করেছেন তাঁরা। তবে এ বিষয়ে 'বেতনবৈষম্য দূরীকরণসংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি' গঠিত হলেও তাদের সভা এখনো হয়নি। জানা গেছে, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এ কমিটির সভাপতি। তিনি দেশের বাইরে আছেন। চলতি মাসের মাঝামাঝিতে তিনি দেশে ফিরবেন। এর পরই এ কমিটির সভা হতে পারে।
Published in: http://www.kalerkantho.com/print-edition/first-page/2015/10/05/275572

শিক্ষকদের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবেন না প্রধানমন্ত্রী

শিক্ষকদের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার কিছু নেই বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ রোববার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

শিক্ষকদের বেতন ও মর্যাদা বৃদ্ধির আন্দোলন প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকবে কেন? আমার এখানে হস্তক্ষেপ করার কিছু নেই। ৯১ শতাংশ বেতন বাড়িয়েছি। কেউ কি কখনো কল্পনা করেছে, এই শিক্ষকদের জিজ্ঞাসা করেন। কখনো কেউ চিন্তা করেছে? আমি মনে হয়, একটু বেশি দিয়ে ফেলেছি। কমিয়ে দেওয়াই বোধ হয় ভালো ছিল।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁদের চাকরির বয়স ৬৫ বছর আর সরকারি চাকরিজীবীদের বয়স ৫৯ বছর। এগুলো তো বিবেচনায় নিতে হবে। আজকে যেটা নিয়ে আলোচনা করছে, সেটা নিয়ে আমারই তো প্রস্তাব ছিল। পিএসসির একটা আলাদা ইউনিট করে আমরা চাচ্ছিলাম... কিন্তু ওনারা আন্দোলন করছেন। তার মানে যে বেতন বাড়িয়েছি, নিশ্চয় তাঁরা বর্ধিত বেতন গ্রহণ করবেন না। যতক্ষণ পর্যন্ত সমাধান না হয়।’
শিক্ষকদের উদ্দেশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ওনারা সচিবদের সঙ্গে তুলনা করছেন। আচ্ছা সচিবরা কী কী সুবিধা পাচ্ছেন আর ওনারা কী কী ভোগ করছেন তার একটা তুলনামূলক চিত্র লেখেন না। কোনো সচিব কিন্তু অন্য কোথাও চাকরি করতে পারেন না। সেটা জানেন ভালো করে। কিন্তু আমাদের শিক্ষকেরা পারেন। কোন ইউনিভার্সিটির কত শিক্ষক কোন প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে চাকরি করেন সে হিসাব কিন্তু আমার কাছে আছে।’
শিক্ষকদের উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কথা নাই বার্তা নাই ওনারা ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ করে দেবেন। কেন পড়াশোনা বন্ধ করবেন? শিক্ষকরা আন্দোলন করতে যাবেন, কীসের জন্য? আর যদি করতে হয়, ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ করার রাইট তো তাঁদের নাই। এই ছেলেমেয়েদের কী অবস্থা হবে! কতগুলি ক্লাস নষ্ট হচ্ছে। ক্লাসগুলি তো তাদের ঠিকমতো নিতে হবে। আর আমরা যেটা নিজেরাই চিন্তা-ভাবনা করছি, এটা নিয়ে তাদের আন্দোলন করার দরকার ছিল না। আন্দোলন যখন করছে, করতে থাকুক। এখানে আমার হস্তক্ষেপের কিছু নেই।’
তিনি বলেন, ‘তাঁরা আন্দোলন করছেন। বিষয়টি অর্থমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী দেখবেন। কমিটি করে দেওয়া হয়েছে, কমিটি দেখবে। কিন্তু আমি ওনাদের অনুরোধ করব—ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করবেন না।’
Source: http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/646177
আরো দেখুনঃ 

অস্টম পে-স্কেলে শিক্ষকদের মর্যাদার অবনমন বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য (ভিডিও)

Sunday, September 27, 2015

ভর্তি পরীক্ষা বর্জন ও লাগাতার কর্মবিরতির পরিকল্পনা

মুসতাক আহমদ 
অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহে পুনরায় আন্দোলনে নামছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এই দফার আন্দোলনে ভর্তি পরীক্ষা বর্জন করে বিশ্ববিদ্যালয় পুরোপুরি অচল করে দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা এই কর্মসূচি পালন করবেন। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের দায়িত্বশীল সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।

দাবি-দাওয়া আদায় না হলে ঈদের পর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা পুনরায় আন্দোলনে নামবেন- আগে থেকেই এমন ঘোষণা ছিল। এ পরিস্থিতিতে ঈদের পর প্রথম কর্মদিবসে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বেতন ও পদমর্যাদা ইস্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মন্ত্রিসভা কমিটির ওপর আস্থা রাখার অনুরোধ জানান। রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে শিক্ষামন্ত্রী এ অনুরোধ জানান।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল রোববার বিকালে যুগান্তরকে বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর ওপর আমাদের আস্থা আছে। মন্ত্রিসভা কমিটির অন্য সদস্যদের উপরও আস্থা আছে। কিন্তু কমিটি প্রধান এ বিষয়ে আস্থা রাখার মতো কোনো পদক্ষেপ এখনও নেননি। গত ৭ সেপ্টেম্বর কমিটির ওপর দায়িত্ব দেয়া হল। কমিটি প্রধান এখন পর্যন্ত এ নিয়ে একটি সভাও ডাকতে পারেননি। উপরন্তু তিনি একমাসের জন্য দেশের বাইরে চলে গেছেন। এটা শিক্ষকদের প্রতি চরম অবহেলার একটি দৃষ্টান্ত। শিক্ষকরা একমাস অপেক্ষা করবেন কিনা বা সাধারণ শিক্ষকদের আমরা বিষয়টি বোঝাতে পারব কিনা, জানি না। তবে আমাদের ওপর অনেক চাপ আছে। আমরা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছি।

জানা গেছে, ৫ অক্টোবরের মধ্যে বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে ঈদুল আজহার ছুটির শেষ হবে। এরআগে ১ অক্টোবর দাফতরিক কাজ শুরু হবে। বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর আগামী ৬ অক্টোবর ফেডারেশনের বৈঠক ডাকা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য এ বৈঠক ডাকা হয়েছে। ওইদিনই পরবর্তী কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ভর্তি মৌসুম চলছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিমধ্যে ভর্তিচ্ছুদের আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে। আগামী ৯ অক্টোবর এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা শুরু হবে। অক্টোবর মাসেই অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা রয়েছে। এই পরীক্ষা নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। ফেডারেশন সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষকরা ভর্তি পরীক্ষা বন্ধ করে দেয়ার পক্ষে মত দিচ্ছেন। একই সঙ্গে লাগাতার কর্মবিরতি ডেকে বিশ্ববিদ্যালয় পুরোপুরি অচল করে দেয়ার পক্ষেও তাদের অবস্থান। ৯ অক্টোবরের ভর্তি পরীক্ষাকে সামনে রেখেই এই দুটি কর্মসূচি ঘোষণা হতে পারে বলে জানা গেছে।
পরবর্তী কর্মসূচির বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক কামাল যুগান্তরকে বলেন, কর্মসূচি কী হবে তা আমরা এখনও জানি না। তবে আমাদের ওপর ট্রিমেন্ডাস (প্রচণ্ড) চাপ আছে। শিক্ষকরা ভর্তি পরীক্ষা বর্জন করে বিশ্ববিদ্যালয় পুরোপুরি অচল করে দেয়ার পক্ষে মত দিচ্ছেন। তিনি বলেন, আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। পৃথিবীতে এমন কোনো দেশ নেই যেখানে একবার সুবিধা দিয়ে তা কেড়ে নেয়ার দৃষ্টান্ত পাওয়া যাবে। কিন্তু বাংলাদেশের কয়েকজন ব্যক্তি সেই দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। তারা রাষ্ট্রে বিশৃংখলা সৃষ্টি করতে চান। বিশ্ববিদ্যালয়ে অশান্তি সৃষ্টি করতে চান। এজন্যই এমন পদক্ষেপ নিয়েছেন। আমরা ওইসব ব্যক্তিদের চিহ্নিত করেছি। তাদের মুখোশ উন্মোচন করে দেয়া হবে। শিক্ষকরা এই আন্দোলন থেকে সরবেন না।

উল্লেখ্য, গত ৭ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিসভায় অষ্টম পে স্কেল অনুমোদিত হয়। পরদিনই প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা আন্দোলনে নামেন। সব শিক্ষকের অভিন্ন দাবি সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহাল করা। এছাড়া স্তর অনুযায়ী দাবি আলাদা দাবিও আছে।

Published in: http://www.jugantor.com/first-page/2015/09/28/328974

Thursday, September 24, 2015

ঈদের পর ফের আন্দোলনে যাচ্ছেন শিক্ষকরা- বৈষম্য দূরীকরণ, স্বতন্ত্র পে-স্কেল

নিজামুল হক



স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো ও বেতন বৈষম্য দূরীকরণের দাবিতে আন্দোলনে মাঠে রয়েছেন সাড়ে ৩ লাখের বেশি শিক্ষক। দাবি আদায়ে মানববন্ধন, ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন, কর্মবিরতিসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছেন। ঈদ বিরতির পর আবারো আন্দোলনে যাচ্ছেন তারা। নভেম্বরে অনুষ্ঠিত প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা বর্জনের হুমকি দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষকরা। আর দাবি না মানলে আসন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়া থেকে বিরত থাকবেন এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে শিক্ষামন্ত্রীর আলোচনা হলেও সমঝোতা হয়নি। ফলে আন্দোলন থেকে সরে যাচ্ছেন না শিক্ষকরা। আন্দোলনের অংশ হিসাবে আসন্ন ভর্তি পরীক্ষাও বর্জনের হুমকি দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফেডারেশনের মহাসচিব অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষামন্ত্রী ডেকেছেন তাই আমরা গিয়েছিলাম। আমাদের ক্লাসরুমে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করেছেন। আমরা বলেছি, আন্দোলন ও আলোচনা একসঙ্গে হবে। আন্দোলনরত শিক্ষকরা বলেন, দাবি পূরণ না হলে আন্দোলন থেকে সরে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। শিক্ষকরা মনে করেন, আন্দোলনই দাবি আদায়ের একমাত্র পথ, তাই আন্দোলনে থাকতে হবে। পাশাপাশি আলোচনাও চালিয়ে যেতে হবে। ঈদের ছুটিশেষে আবারো আন্দোলন শুরু হবে।

কলেজ

সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল বাদ দেয়ার প্রতিবাদে আন্দোলনের মাঠে রয়েছে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি। কর্মসূচির অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে সারাদেশে দুই দফা কর্মবিরতি পালন করেছেন তারা। কর্মসূচির অংশ হিসাবে আগামী ৭ অক্টোবর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মানববন্ধন করবেন। এছাড়া ১৪ ও ১৫ অক্টোবর ক্লাস বর্জন কর্মসূচি দেয়া হয়েছে। শিক্ষকরা বলছেন, ঘোষিত পে-স্কেলে শিক্ষা ক্যাডারে গ্রেড কয়েক ধাপ কমিয়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়া সিলেকশন গ্রেড বাতিল করায় শিক্ষকরা আরও বৈষম্যের শিকার হবেন। এই বৈষম্য নিরসনে সরকারের কাছে দাবি জানানো হয়েছে। দাবি না মানায় আন্দোলন হচ্ছে। ঈদের পর আরো কঠোর আন্দোলন করা হবে।

প্রাথমিক

বেতনবৈষম্য কমানোসহ ৭ দফা দাবিতে কর্মসূচি পালন করেছে সরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। বেতন গ্রেড ১১তম ধাপে পুনর্নিধারণসহ ১১ দফা দাবিতে কঠোর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের দাবি না মানা হলে অক্টোবর থেকে লাগাতার কর্মসূচি দেয়া হবে।

এছাড়া প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তার পদমর্যাদা বাস্তবায়ন ও জাতীয় বেতন স্কেলের ১০ম গ্রেডে অন্তর্ভুক্তকরণসহ পাঁচ দফা দাবিতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। প্রধান শিক্ষক সমিতির নেতা আলাউদ্দিন মোল্লা জানান, প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দেয়ার দেড় বছরেও প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদা ও বেতন স্কেল দেয়া হয়নি। ৮ম বেতন কাঠামোতে ১০ম গ্রেডে অন্তর্ভুক্তসহ দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তা হিসেবে ঘোষণা না দেয়া হলে ঈদের পর আমরা কর্মসূচিতে যাবো।


একই দাবিতে ৮ম বেতন কাঠামোতে গ্রেড ও টাইম স্কেল পুনর্বহাল, প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত দ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদা বাস্তবায়ন, ১০ গ্রেডে প্রধান শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করাসহ বিভিন্ন দাবিতে লাগাতার কর্মবিরতির হুমকি দিয়েছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির আহবায়ক রিয়াজ পারভেজ বলেন, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আমাদের দাবি পূরণ না হলে দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আগামী ৩ থেকে ৫ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করা হবে। এরপরও দাবি বাস্তবায়ন না হলে আগামী ৬ অক্টোবর থেকে লাগাতার কর্মবিরতি চলবে।

Source: http://www.ittefaq.com.bd/national/2015/09/24/37259.html

Monday, September 21, 2015

শিক্ষকদের দাবি ও বেতন স্কেল পর্যালোচনা: দুই মন্ত্রীকে দায়িত্ব দিলেন প্রধানমন্ত্রী


চলমান শিক্ষক আন্দোলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একান্তে কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আন্দোলন, কলেজ শিক্ষকদের কর্মবিরতি ও অন্যান্য শিক্ষক সংগঠনের বিভিন্ন কর্মসূচি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে বিশদ জানানো হয়। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এ সময় উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী এ দুই মন্ত্রীকে সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব দেন। বৈঠক শেষে দুপুরে অর্থমন্ত্রী শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে গিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেড় ঘণ্টা রুদ্ধদ্বার সভা করেন। আন্দোলনরত শিক্ষকরা এর আগে তাদের দাবির ব্যাপারে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছিলেন।
নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আন্দোলন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী দুই মন্ত্রীকে বেতনবৈষম্য নিরসন-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে আলোচনা করে সমাধানের পরামর্শ দেন। প্রয়োজনে এ বিষয়ে কোনো কমিশন করা যায় কি না তা-ও বিবেচনায় নেওয়ার কথা বলেন তিনি। জানা গেছে, সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল বাতিল করায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষকদের ক্ষতি কীভাবে পুষিয়ে নেওয়া যায়, তা নিয়ে সরকারের এ দুই মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছেন। নতুন করে এ দুই সুবিধা ফের পুনর্বহাল করা সম্ভব নয় বলেও সেখানে আলোচনা করা হয়। শিক্ষক ছাড়া অন্যরাও একই দাবিতে নতুন করে মাঠে নামতে পারেন বলেও বৈঠকে অভিমত আসে।
তাই বিকল্প কী উপায়ে শিক্ষকদের সন্তুষ্ট করা যায়, তার উপায় খুঁজে বের করতে মন্ত্রিসভা কমিটিতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দেন। একাধিক সূত্র জানায়, হঠাৎ করেই একাধিক শিক্ষক সংগঠন আন্দোলনে নেমে পড়ায় প্রধানমন্ত্রী কিছুটা অসন্তোষও প্রকাশ করেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বৈঠক প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী গত রাতে সমকালকে বলেন, শিক্ষকদের দাবি-দাওয়া সম্পর্কে সরকারের উচ্চ মহলে জানানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী দু'জনের সঙ্গেই তিনি কথা বলেছেন। সামগ্রিকভাবে সরকারের মনোভাব ইতিবাচক। 'আলোচনায় কী সিদ্ধান্ত হয়েছে'- প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, 'চেষ্টা করে যাচ্ছি। ইনশাআল্লাহ সমাধান হবে। শিক্ষকরা যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা সময়মতো নেন, ঠিকভাবে ক্লাস নেন, সে অনুরোধ জানাচ্ছি।' সরকারি কলেজ শিক্ষকদের আন্দোলন প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, তারা আগে কোনোরকম আলোচনা করা ছাড়াই সরাসরি আন্দোলনে গেছেন। তাদের সঙ্গে সরকারের তরফে উদ্যোগী হয়েই আলোচনা করা হবে।
জানা গেছে, ঈদের পর আন্দোলনরত সব শিক্ষক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার। এ দুটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সূত্র থেকে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়কে জানানো হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের আলোচনা চলছে এবং তা অব্যাহত রাখা হবে।
জানা গেছে, প্রাথমিক, মাধ্যমিক, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষকদের বিভিন্ন সংগঠনের চলমান আন্দোলন গভীর পর্যবেক্ষণ করছে সরকার। সরকারের দৃষ্টিতে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা ও মর্যাদাকেন্দ্রিক এ আন্দোলনের মূল ইস্যু মূলত দুটি। জাতীয় বেতন স্কেল থেকে 'টাইম স্কেল' ও 'সিলেকশন গ্রেড' বাদ দেওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষকরা আন্দোলনে নেমেছেন। এ ছাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেডের পাশাপাশি পদমর্যাদার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তাদের দাবিতে তুলে ধরেছেন। টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেডের সুবিধা বিকল্প কী উপায়ে দেওয়া যেতে পারে, তা নিয়েই এখন ভাবছে সরকার।
এক মাস ধরে দেশজুড়ে শিক্ষক আন্দোলন চললেও এতদিন কোনো কোনো মহল থেকে বলা হচ্ছিল, সংকট সমাধানে সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। এভাবে চলতে থাকলে আসন্ন ঈদের পর লাগাতার কর্মবিরতি ও ধর্মঘটেরও ডাক দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন শিক্ষক নেতারা। এ অবস্থায় শিক্ষাসংশ্লিষ্ট দুটি মন্ত্রণালয় থেকে আলোচনার উদ্যোগের খবর এলো।
শিক্ষক আন্দোলনে বর্তমানে সবচেয়ে বেশি সরব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি কলেজের শিক্ষকরা। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল সমকালকে বলেন, পদমর্যাদার বিষয়ে তারা সবচেয়ে বেশি সোচ্চার। সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল তুলে দিয়ে আমলাদের তুলনায় শিক্ষকদের নিচে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। একই ক্ষোভ ঝরেছে সরকারি কলেজ শিক্ষক নেতাদের বক্তব্যেও। জানতে চাইলে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির প্রভাবশালী নেতা অধ্যাপক মাসুমে রাব্বানী খান সমকালকে বলেন, টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড না থাকলে প্রশাসন ক্যাডার ছাড়া অন্য সব ক্যাডারের সদস্যরা বঞ্চিত হবেন।
Published in: http://www.samakal.net/2015/09/22/163770

Saturday, September 19, 2015

আন্দোলন-আলোচনা একসঙ্গে চালিয়ে যাবেন শিক্ষকেরা

আন্দোলনরত সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীর আলোচনা সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়েছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, বেতনবৈষম্য নিরসন-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিকেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। শিক্ষামন্ত্রী একা কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারেন না।
গতকাল রাতে শিক্ষকনেতারা প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, তাঁরা আন্দোলন ও আলোচনা একসঙ্গে চালিয়ে যাবেন। দাবি পূরণ ছাড়া তাঁরা আন্দোলন থেকে পিছপা হবেন না।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কমিটির সভায় একজন সদস্য হিসেবে শিক্ষামন্ত্রীর সক্রিয় ভূমিকা থাকবে। তবে খুব শিগগির ওই কমিটির সভা হওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ, এ-সংক্রান্ত কমিটির আহ্বায়ক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ১৬ অক্টোবর বিদেশে থাকবেন। আবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৩ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে যোগ দিতে নিউইয়র্কে যাচ্ছেন, ফিরবেন ৩ অক্টোবর।
দেশে ফেরার পরদিনই কাল শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে কার্যত শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষকদের বক্তব্য শুনেছেন। একপর্যায়ে শিক্ষকনেতারা শিক্ষামন্ত্রীর কাছ জানতে চান, তাঁরা এখান থেকে কী বার্তা নিয়ে শিক্ষকদের কাছে যাবেন। তখন শিক্ষামন্ত্রী সুনির্দিষ্ট বার্তা না দিয়ে খুব শিগগির আলোচনাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন।
বৈঠক থেকে বেরিয়ে শিক্ষকনেতারা জানান, তাঁদের আন্দোলন চলবে, আলোচনাও চলবে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একটি সূত্র জানায়, অষ্টম বেতন স্কেল অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। আর মন্ত্রিসভাই বেতনবৈষম্য নিরসন কমিটিকে দায়িত্ব দিয়েছে। তাই ওই কমিটিকেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে সরকারের নীতিনির্ধারণ পর্যায় থেকে দ্রুত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হলে আন্দোলন থামতে পারে।
একাধিক শিক্ষকনেতা প্রথম আলোকে বলেছেন, আলোচনার পাশাপাশি দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের আন্দোলন চলবে। তাঁরা এখন আনুষ্ঠানিক আলোচনা চান। তাঁদের দাবি, শিক্ষকদের পৃথক বেতন স্কেলের জন্য একটি কমিশন গঠন করে দেওয়া হোক। এর আগ পর্যন্ত অষ্টম বেতন স্কেলে পদমর্যাদায় যে অবনমন হয়েছে, সেটি পরিবর্তন করে সপ্তম বেতন স্কেলের মতোই বহাল করা হোক। কারণ, সপ্তম গ্রেডে শিক্ষকদের গ্রেড-১-এ (সচিবদের সমান) যাওয়ার সুযোগ ছিল। সিলেকশন গ্রেড বাদ হওয়ায় এখন আর এই সুযোগ থাকল না।
পৃথক বেতনকাঠামো ও পদমর্যাদা-সংক্রান্ত বৈষম্য নিরসনের দাবিতে সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা প্রায় চার মাস ধরে আন্দোলন করছেন। ৭ সেপ্টেম্বর সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল বাদ দিয়ে অষ্টম বেতন স্কেল অনুমোদন হওয়ায় আন্দোলন জোরদার করেন তাঁরা। ইতিমধ্যে তিন দিন পূর্ণদিবস এবং আরও কয়েক দিন তিন ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করেন তাঁরা।
কাল রাজধানীর মিন্টো রোডে শিক্ষামন্ত্রীর সরকারি বাসায় বেলা ১১টা থেকে প্রায় দেড় ঘণ্টা আলোচনা করেন শিক্ষকেরা। আলোচনায় শিক্ষক প্রতিনিধিদলে নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ও মহাসচিব এ এস এম মাকসুদ কামাল। এই আলোচনায় কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। দুই পক্ষই বলছে, এটা ‘অনানুষ্ঠানিক আলোচনা’।
শিক্ষকেরা বলেছেন, তাঁরা আশা করছেন, সরকার শিগগিরই আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করবেন। আর শিক্ষামন্ত্রী আশা করেছেন, খুব শিগগির এ ব্যাপারে একটি সুষ্ঠু সমাধানে পৌঁছানো যাবে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, আলোচনায় শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষকদের দাবিদাওয়ার বিষয়টি প্রথমে জানতে চান। তখন শিক্ষকেরা মন্ত্রীকে বলেন, তাঁরা শিক্ষকদের জন্য পৃথক একটি বেতন স্কেল দাবি করেছেন। এ জন্য দ্রুত একটি আলাদা কমিশন গঠন করতে বলেছেন। দাবি পূরণ না হলে আগামী ৯ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ভর্তি পরীক্ষাও হুমকির মুখে পড়তে পারে—এমন আশঙ্কার কথাও শিক্ষামন্ত্রীকে বলেছেন। এ সময় মন্ত্রীকে তাঁরা অনুরোধ করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভায় যোগ দিতে নিউইয়র্কে যাওয়ার আগেই যেন আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করেন। বেতনবৈষম্য নিরসন-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির কাজও যেন দ্রুত শুরু করা হয়। পারলে ঈদের আগে কমিটিকে বৈঠকে বসার জন্য তাঁরা অনুরোধ জানান। অর্থমন্ত্রী বিদেশে যাওয়ায় তাঁর অনুপস্থিতিতে ওই কমিটির সদস্য হিসেবে শিক্ষামন্ত্রী যেন আলোচনার ব্যবস্থা করেন, সেই অনুরোধও করেন শিক্ষকনেতারা।
পরে সংবাদ ব্রিফিংয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষকদের সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। শিক্ষকেরা যে প্রস্তাব দিয়েছেন, সরকারও সেটি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। এ জন্য একটি কমিটি করা হয়েছে। শিক্ষকদের মূল দাবি অনুযায়ী পৃথক বেতনকাঠামো করা হবে কি না—জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, সরকার এটি প্রত্যাখ্যান করেনি। আলোচনা হবে। তবে শিক্ষকদের মর্যাদা কোনোভাবেই ছোট করে দেখা হচ্ছে না।
এ সময় শিক্ষকনেতা ফরিদ উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, তাঁদের প্রথম ও প্রধান দাবি স্বতন্ত্র বেতনকাঠামো। শিক্ষকনেতা এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, পৃথক বেতনকাঠামোর জন্য অবিলম্বে একটি কমিশন গঠন করতে হবে।
পরে শিক্ষামন্ত্রী প্রথম আলোকে বলেন, তিনি নিশ্চিত, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একটি সমাধান বেরিয়ে আসবে।

Source: http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/636943

আমলাদের পরামর্শেই কি সিদ্ধান্ত!

সালাম জুবায়ের

সম্প্রতি কিছু ঘটনার প্রেক্ষাপটে ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে যে, ঘুণেধরা আমলাতন্ত্র এবং চরম উচ্চাভিলাষী আমলাদের নানা রকম কারসাজি সরকারের বিভিন্নমুখী সাফল্যকে কিছুটা মস্নান করে দিচ্ছে। এটা সরকারের নীতিনির্ধারকরা বুঝেও না বোঝার ভান করলেও জনগণ ঠিকমতো নিচ্ছে না। এই যে, সরকারের কিছু সিদ্ধান্ত জনগণ ঠিকমতো গ্রহণ করছে না, তার ফলশ্রুতি হচ্ছে সরকারের ওপর সাধারণ মানুষের ক্ষোভ বাড়তে পারে। আমলাদের কারণে সরকারের ওপর সাধারণ মানুষের ক্ষোভ কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না।

গণতান্ত্রিক এবং সংসদীয় পদ্ধতির সরকার ব্যবস্থায় রাষ্ট্র পরিচালনা করেন জনগণের ভোটে নির্বাচিত সংসদ, সংসদ সদস্য এবং তাদের মাধ্যমে মনোনীত মন্ত্রীরা। সব গণতান্ত্রিক দেশে আমলারা কাজ করেন মন্ত্রীদের নির্দেশে। মন্ত্রিপরিষদ সভার নির্দেশ, পরামর্শ এবং সিদ্ধান্তের আলোকে মন্ত্রণালয়ের সব ধরনের কর্মকা- সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণের এখতিয়ার একমাত্র মন্ত্রীদের। এভাবেই চলছিলও। কিন্তু ইদানিং দেখা যাচ্ছে আমলারা অনেক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিচ্ছেন মন্ত্রী এবং সরকারের ওপর। আমলারা সুকৌশলে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিলেও সেই সিদ্ধান্তের ফলে কোন বিরূপ পরিস্থিতির উদ্ভব হলে তার দায় কোন আমলাই গ্রহণ করেন না। তখন সব দায়-দায়িত্ব জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসে সরকার এবং সরকারের নীতিনির্ধারকদের ওপর। কোন সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপটে পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে সরকারকে পিছু হটে সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করতে এবং ভাবমূর্তি সংকটে পড়তে হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে সরকার প্রেস্টিজ ইস্যু মনে করে সিদ্ধান্ত ভুল হলেও গো ধরে অবস্থান পাল্টান না। তবে আমলারা এর কোনটারই দায় গ্রহণ করেন না। বরং সরকারের ভুল সিদ্ধান্তের সমালোচনায় তারাও যোগ দেন।

সম্প্রতি একাধিক ইস্যুতে এমন ঘটনা ঘটেছে। সরকারের নীতিনির্ধারকরা বিষয়টি উপলব্দি করতে পারছেন কিনা জানি না, তবে সরকার যে তাতে সমালোচনার মুখে পড়ছেন তা নিশ্চিত।

এক্ষেত্রে অতিসম্প্রতি যা ঘটল সেটি নিয়েই প্রথমে কথা বলা যায়। তা হলো_ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর ভ্যাট আরোপ করা। এ নিয়ে সরকার নাকানি-চুবানি খাওয়ার পর সবাই উপলব্দি করলেন যে, দেশের শ্রেণী-পেশা নির্বিশেষে কোন লোকই এভাবে উচ্চ শিক্ষাক্ষেত্রে ভ্যাট আরোপ করাকে বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্ত বলে মেনে নেননি। বরং সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার মতো একটি কাজ বলে উল্লেখ করেন। ক্ষমতাসীন দলের কেন্দ্রীয় নেতা থেকে শুরু করে সরকার সমর্থক শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী কেউই সরকারের এমন উদ্ভট সিদ্ধান্ত মানতে রাজি হননি এবং এইসব দলীয় নেতা, শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবী তাদের ক্ষোভের কথা প্রকাশ্যে, কেউ সংবাদপত্রে কলাম লিখে, কেউ টিভির টকশো'তে তাদের সব ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। আর সারাদেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীরাতো পথে নেমে তুলকালাম কা- ঘটিয়ে দিল, যার ভুক্তভোগী হলেন লাখ লাখ মানুষ। এ নিয়ে পত্রিকার পাতায় যখন প্রতিদিনই সরকারকে দোষারোপ করে খবর প্রকাশিত হতে শুরু করল তখন সরকারের টনক নড়ে এবং সিদ্ধান্তটি ঠিক হয়নি মনে করে তা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হলেন। কিন্তু তার আগেই ক্ষতি যা হওয়ার তা হয়ে গেছে। দু'ধরনের ক্ষতি হলো এতে- প্রথমত মানুষ বুঝলেন বর্তমান সরকার কোন সিদ্ধান্তের ফল বা প্রতিক্রিয়া কি হতে পারে তার সাতপাঁচ না ভেবেই আমলাদের পরামর্শে হুট করে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন এবং এর ফলে সরকারের ওপর মানুষের আস্থায় কিছুটা হলেও চিড় ধরেছে। অন্যদিকে মানুষ অবাক হয়েছেন, যা তারা প্রকাশ্যে বলেছেনও। তাহলো_ যে সরকার সময়মতো একের পর এক ভালো সিদ্ধান্ত ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে শিক্ষাক্ষেত্রে যুগান্তকারী সাফল্য অর্জন করেছেন, বলা যায় বিপ্লব সাধন করেছেন, সেই সরকারই কোন চিন্তায়, কোন গণবিরোধী আমলার পরামর্শে শিক্ষাক্ষেত্রে এমন অপ্রয়োজনীয় একটি সিদ্ধান্ত নিলেন? জনপ্রিয় অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য একটি চিভি টকশো'তে অনেকটা ক্ষোভের সঙ্গেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর ভ্যাট আরোপের অসুবিধা, অপ্রয়োজনীয়তা, ভ্যাটের মাধ্যমে সরকারের কতটা আয় বাড়বে এবং ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্ত শিক্ষাক্ষেত্রে সরকারের ইতিপূর্বে গৃহীত ভালো সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপের কতটা বিরোধী- এসব বিস্তারিত তুলে ধরে ক্ষুব্ধ হয়ে বলেই ফেললেন, খুঁজে বের করা দরকার সরকারের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা এমন গণবিরোধী সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়ার এই লোকগুলো কারা?

প্রায় একই ধরনের আরেকটি কা- ঘটেছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের ক্ষেত্রে। বহু আলোচিত সম্প্রতি ঘোষিত ৮ম জাতীয় পে-স্কেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মর্যাদা এক ধাপ নামিয়ে দেয়া হয়েছে। এ বিষয়টি অবশ্য ভিন্নভাবেও ব্যাখ্যা করা যায়। তা হলো_ আমলারা সুকৌশলে তাদের বেতন কাঠামো এমনভাবে নির্ধারণ করেছেন যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন এক ধাপ নিচে থাকতেই থেমে যাবে। অর্থাৎ আমলারা বেতন-ভাতার দিক দিয়ে সর্বোচ্চ ধাপে উঠবেন কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরা সেই ধাপে উঠতে পারবেন না। এর অর্থ দাঁড়ায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা বেতন-ভাতার দিক দিয়ে আমলাদের চেয়ে এক ধাপ নিচে থাকবেন। আগের পে-স্কেলে এমন বৈষম্য ছিল না, তখন একজন আমলা যখন সর্বোচ্চ বেতন পেতেন একই বেতন পেতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপকও। ৮ম পে-স্কেলে বিষয়টি নতুন করে ঢেলে সাজিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বেতন ও মর্যাদা দুটিই নিচে রাখা হয়েছে। তাদের আরও ওপরের ধাপে যাওয়ার সুযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আমলাদের পরামর্শে গৃহীত এ সিদ্ধান্ত অবশ্যই সরকারের নিজের পায়ে কুড়াল মারার মতো একটি সিদ্ধান্ত।

সমগ্র বিশ্বেই শিক্ষকদের মর্যাদা সাধারণত অন্য সাধারণ পেশার মানুষের চেয়ে একটু ওপরে রাখা হয়। শিক্ষার মতো একটি মহান পেশায় যাতে সবচেয়ে প্রতিভাবান ছাত্ররা আসতে অনুপ্রাণিত হয় সেজন্যই তাদের বেতন-ভাতা এবং পেশাগত মর্যাদা সাধারণ চাকুরেদের চেয়ে একটু ওপরে রাখা হয়। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার সঙ্গে গবেষণার বিষয়টি ওঁৎপ্রোতভাবে জড়িত। শিক্ষকরা যদি ভালো বেতন-ভাতা না পান তবে তাদের গবেষণার দিকে নেয়া যাবে না। আর গবেষণা না হলে বিশ্ববিদ্যালয় তার জাত-মান ধরে রাখতে পারবে না। যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা একই সঙ্গে পড়াশোনা ও গবেষণার ক্ষেত্রে প্রতিভার পরিচয় না দেন সে বিশ্ববিদ্যালয় কখনোই ভালো বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে সুনাম কুড়াতে পারে না। কিন্তু বাংলাদেশে অনেক ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম চোখে পড়ে। শেখ হাসিনার সরকার কথায় নয় বাস্তবেই শিক্ষাক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দেন। উন্নয়ন প্রকল্পও এক্ষেত্রে বেশিই। কিন্তু তারপরও একথা বলা যাবে না যে, শিক্ষকরা অন্যদের চেয়ে বেশি সুবিধা পায়। শিক্ষকদের ভালো বেতন-ভাতা দেয়ার অনেক উদাহরণ আমাদের পার্শ্ববর্তী সব দেশেই আছে। সরকারি অর্থে পরিচালিত সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন 'বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন'র সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর এএসএম মাকসুদ কামাল সম্প্রতি এক টিভি টকশো'তে তাদের দাবি-দাওয়ার কথা বলতে গিয়ে আমাদের পাশের দেশ ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ইত্যাদি দেশের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা বাংলাদেশের চেয়ে বেশি বেতন পাওয়ার উদাহরণ তুলে ধরেন। বাংলাদেশে এর ব্যতিক্রম কেন হচ্ছে সে প্রশ্নের উত্তর কে দেবে?

এখন কথা হচ্ছে এই শিক্ষকদের সঙ্গে এভাবে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হলো তার পরিণাম কি ভালো হবে? অবশ্যই না। প্রতিটি সচেতন মানুষ এজন্য আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে দায়ী করছেন। সরকার তার ভালো-মন্দের দিকটি না ভেবেই আমলাদের কুপরামর্শ গ্রহণ করে নিজের বিপদ ডেকে এনেছেন। এতে সরকারের অর্থনৈতিক কোন লাভ-লোকসান নেই। তারপরও কেন সরকার এভাবে সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের অপমান করলেন শুধু আমলাদের খুশি করতে গিয়ে। এটা একটি দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে ভালো ফল বয়ে আনবে না- এ কথা হলফ করে বলা যায়।

অতি সম্প্রতি সরকার আরেকটি বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তা হলো_ দেশের মানুষের হাতে হাতে যে সব মোবাইল ফোন চলছে তার সবগুলো সিম আবার রেজিস্ট্রেশন করতে নির্দেশ দেয়া। কেন সরকার হুট করে এমন সিদ্ধান্ত নিলেন তার হদিস পাচ্ছেন না সচেতন দেশবাসী। আর মোবাইল সিম রেজিস্ট্রেশন করতে নির্দেশ দেয়ার আগে টেলিফোন মন্ত্রী (প্রতিমন্ত্রী) এবং আমলারা যে কা-কারখানা করলেন তা সাধারণ সচেতন মানুষের হাসির খোরাক হয়েছে। একবার বললেন সব সিম পুনঃরেজিস্ট্রেশন করতে হবে, পরে আবার বললেন যাদের রেজিস্ট্রেশন নেই তাদের সিম রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। সরকারের এক কর্মকর্তা মন্ত্রীর বক্তব্যের বিরোধিতা করে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বললেন। এভাবে একাধিক বক্তব্য দিয়ে মন্ত্রী এবং আমলারা পুরো বিষয়টি তালগোল পাকিয়ে ফেললেন। মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীরা একেক জনের মুখে একেক রকম কথা শুনে দিন কয়েক চরম বিভ্রান্তির মধ্যে ছিলেন। এখনও সবাই নিশ্চিত করে জানেন না আসলে তাদের কি করতে হবে। তবে একটি বিষয়ে সবাই নিশ্চিত যে, সরকারের এমন বিভ্রান্তিকর এবং মন্ত্রী-আমলার উল্টাপাল্টা কথাবার্তায় মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা সবাই ক্ষুব্ধ, শুধু ক্ষুব্ধ নয়, চরম ক্ষুব্ধ। সচেতন মোবাইল ব্যবহারকারীরা মনে করেন সরকারের টেলিফোন মন্ত্রণালয় দেশের মানুষের সুবিধা-অসুবিধার কথা চিন্তা করে না, মন্ত্রণালয় চলে আমলাদের কথায়। কেন মন্ত্রণালয় এমন উল্টাপাল্টা সিদ্ধান্ত এবং বিভ্রান্তিমূলক নির্দেশনা দিল? পুরো ঘটনায় সরকার ওপর মানুষের আস্থা বাড়বে না কমবে? এসব নিয়ে তাদের জবাবদিহি করতে বলা উচিত।

এখন সবার প্রশ্ন হচ্ছে_ কেন সব মোবাইল ব্যবহারকারীকে আবার সিম রেজিস্ট্রেশন করতে হবে, কি অপরাধ তাদের? সবাইতো সিম কেনার সময় রেজিস্ট্রেশন করেই সিম কিনেছেন। যদি কেউ রেজিস্ট্রেশন চাড়া সিম কিনে থাকে শুধু তাদেরই নির্দেশ দেয়া উচিত ছিল। তা না করে কেন সবাইকে নির্দেশ দেয়া হলো? কেন সবাইকে আবার টাকা খরচ করে দোকানে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে? এভাবে গ্রাহকদের কেন বিড়ম্বনা এবং কষ্টের মধ্যে ফেলা হচ্ছে?

বিটিআরসির হিসাব অনুযায়ী দেশে এখন সিম ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১২ কোটি ১৮ লাখ ৬০ হাজার। তাদের সবাইকে শহরে মোবাইল ফোন কোম্পানির দোকানে গিয়ে পুনঃরেজিস্ট্রেশন করতে যে কষ্ট করতে হবে তার দায় নেবে কে? সিম পুনঃরেজিস্ট্রেশনের জন্য ১২ কোটি ১৮ লাখ ৬০ হাজার গ্রাহককে গাড়িভাড়া খরচ করে দোকানে যেতে হয় তবে মোট কথা টাকা খরচ হবে তার একটি হিসাব একজন সচেতন নাগরিক তার ফেসবুকে তুলে ধরেছেন। ফেসবুক ব্যবহারকারী জানিয়েছেন, 'একজন গ্রাহকের যদি যাতায়াত বাবদ গড়ে ২০ টাকা করেও খরচ হয় তাহলেও ২৪০ কোটি ৩৭ লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ হবে। সময় আর ঝক্কি ঝামেলার কথা নাই বা বললাম। ১২ কোটি ১৮ লাখ ৬০ হাজার গ্রাহকের সবাই কি চোর ডাকাত! রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, মন্ত্রী, বিচারপতি, পুলিশ, র?্যাব, সচিব সবার সিমও আবার নিবন্ধন করতে হবে। তার মানে উনারা সন্দেহের ঊধর্ে্ব নন! ১৭ বছর ধরে মোবাইল ব্যবহার করছি। দেশের অধিকাংশ সিমই নিবন্ধিত। যেগুলোর নিবন্ধন নেই বা ভুয়া আইডি নাম্বার দেয়া হয়েছে সেগুলোর কানেকশন অফ করে দিলেই তো হয়।'

এভাবে অনেক মানুষই মনে করেন আবার সিম রেজিস্ট্রেশন করতে নির্দেশ দিয়ে সরকার মানুষকে বেহুদা কষ্ট এবং খরচের মধ্যে ফেলছেন এবং এসব করা হচ্ছে স্রেফ আমলাদের পরামর্শে। আমলারা যদি রাজনীতিবিদদের পরামর্শ দিয়ে বেকায়দায় ফেলেন তবে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা কেন সেসব পরামর্শ কানে তুলবেন? বরং আমলাদের চেয়ে দেশের মানুষ যারা ভোট দিয়ে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব দেন একটি রাজনৈতিক দলকে, তাদের কথা বেশি করে ভাবা উচিত। কারণ আমলারা ভোট দিয়ে কাউকে ক্ষমতায় বসাতে পারে না। জনগণ ভোট দিয়ে সরকার বানায়, আর সেই সরকার চলবে আমলাদের কথায় এমন ব্যবস্থা বাংলাদেশের মতো উন্নয়নের পথে ধাবমান একটি দেশের জন্য কোনভাবেই সম্মাজনক নয়।

Published in: http://sangbad.com.bd/sub-editorial/2015/09/20/27140