Sujoy Subroto
বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন গঠিত হয় ১৯৭২ সালে এবং বর্তমানে এর বয়স প্রায় ৪৩ বছর । সারা পৃথিবীব্যাপী পিএসসি যে দায়িত্বগুলো পালন করে তার মধ্যে অন্যতম হল উচ্চ পেশাদারিত্ব সম্পন্ন একটা দক্ষ ও মেধাবী সরকারী মানবসম্পদ তৈরি করা এবং সর্বক্ষেত্রে সততা, জবাবদিহিতা ন্যায়পরায়ণতা বজায় রেখে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে এমন একটা কর্মপরিবেশ ও সংস্কৃতি চালু করা যা কিনা সরকারের উপর জনগণের আস্থা ও বিশ্বাসকে সুদৃঢ় করবে ।
এবং এই জন্যেই সরকারি চাকুরিতে সর্বচ্চ মেধাবীদের নিয়োগ নিশ্চিতকরনের জন্যে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মেধার নীতি বজায় রাখা ও পেশাগত মান অবশ্যই মেনে চলতে হবে কারন এরাই ভবিষ্যতে পাবলিক সেক্টর এর নেতৃত্ব দিবে । মজার ব্যাপার হল বিপিএসসির ওয়েব সাইটেও খুব সুন্দর ভাবে বলা আছে যে এই স্বায়ত্বশাসিত সংস্থার উদ্দেশ্য হল প্রজাতন্ত্রের জন্য সক্ষম ও দক্ষ কর্মকর্তাদের নির্বাচনের মাধ্যমে একুশ শতকের জন্য একটি উপযুক্ত সিভিল সার্ভিস প্রতিষ্ঠা করা যদিও বাস্তবে এর ছিটেফোঁটাও উনারা মেনে চলেন না । সত্যি কথা বলতে কি বিসিএস পরীক্ষা হচ্ছে আমাদের দেশে একটা নাইটমেয়ার এবং এর পুরো প্রক্রিয়া শেষ করতে গড়ে সময় লাগে ৪৭২ দিন (BPSC Annual Report 2013), এর পরে আরও ছয়মাস লাগে রেজাল্ট পাবলিশ , পুলিশ ভেরিফিকেশন এবং মেডিক্যাল টেস্ট শেষ করে নিয়োগ দিতে । বিসিএস এর সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হল কোটা সিস্টেম , এইখানে ৫৬ % নিয়োগ দেওয়া হয় কোটা থেকে এবং ৪৪ % নিয়োগ দেওয়া হয় মেধাবীদের মধ্যে থেকে । অথচ কোটার উদ্দেশ্য ছিল সমাজের অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে সমান সুযোগ দিবার জন্যে এবং ১৯৭৭ সালের পে কমিশন আস্তে আস্তে কোটা পদ্ধতির পরিবর্তন করে ১৯৯৭ সালে এইটা বিলুপ্ত করার পক্ষে মত দিয়েছিলেন । আমাদের সংবিধানের ২৯ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে সবাইকে সরকারী চাকুরিতে নিয়োগের জন্যে সমান অধিকার দিতে হবে কাজেই এই একবিংশ শতাব্দীতে এসে যেখানে বাংলাদেশের প্রায় সব জায়গায় উন্নয়নের ছোয়া লাগছে এবং আস্তে আস্তে গ্রামের সাথে শহরের বৈষম্য দিন দিন কমে আসছে সেখানে কোটা পদ্ধতি বহাল রাখা আসলেই মেধাবীদের প্রতি অন্যায় এবং অযৌক্তিক । আমি একটা জিনিস বুঝি না যে শিক্ষার্থীরা যদি মেডিক্যাল , বুয়েট এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিযোগিতামুলক ভর্তি পরীক্ষায় মেধা এবং যোগ্যতা দিয়ে নিজেদের জায়গা নিজেরা করে নিতে পারে সেখানে বিসিএস এ তাদের জন্যে কোটা রাখার আদৌ কি কোন দরকার আছে , একদিক থেকে বিবেচনা করলে এইটা কিন্তু ওদের প্রতি এক ধরনের করুনা যা তাদের যোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে ।
এবং এই জন্যেই সরকারি চাকুরিতে সর্বচ্চ মেধাবীদের নিয়োগ নিশ্চিতকরনের জন্যে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মেধার নীতি বজায় রাখা ও পেশাগত মান অবশ্যই মেনে চলতে হবে কারন এরাই ভবিষ্যতে পাবলিক সেক্টর এর নেতৃত্ব দিবে । মজার ব্যাপার হল বিপিএসসির ওয়েব সাইটেও খুব সুন্দর ভাবে বলা আছে যে এই স্বায়ত্বশাসিত সংস্থার উদ্দেশ্য হল প্রজাতন্ত্রের জন্য সক্ষম ও দক্ষ কর্মকর্তাদের নির্বাচনের মাধ্যমে একুশ শতকের জন্য একটি উপযুক্ত সিভিল সার্ভিস প্রতিষ্ঠা করা যদিও বাস্তবে এর ছিটেফোঁটাও উনারা মেনে চলেন না । সত্যি কথা বলতে কি বিসিএস পরীক্ষা হচ্ছে আমাদের দেশে একটা নাইটমেয়ার এবং এর পুরো প্রক্রিয়া শেষ করতে গড়ে সময় লাগে ৪৭২ দিন (BPSC Annual Report 2013), এর পরে আরও ছয়মাস লাগে রেজাল্ট পাবলিশ , পুলিশ ভেরিফিকেশন এবং মেডিক্যাল টেস্ট শেষ করে নিয়োগ দিতে । বিসিএস এর সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হল কোটা সিস্টেম , এইখানে ৫৬ % নিয়োগ দেওয়া হয় কোটা থেকে এবং ৪৪ % নিয়োগ দেওয়া হয় মেধাবীদের মধ্যে থেকে । অথচ কোটার উদ্দেশ্য ছিল সমাজের অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে সমান সুযোগ দিবার জন্যে এবং ১৯৭৭ সালের পে কমিশন আস্তে আস্তে কোটা পদ্ধতির পরিবর্তন করে ১৯৯৭ সালে এইটা বিলুপ্ত করার পক্ষে মত দিয়েছিলেন । আমাদের সংবিধানের ২৯ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে সবাইকে সরকারী চাকুরিতে নিয়োগের জন্যে সমান অধিকার দিতে হবে কাজেই এই একবিংশ শতাব্দীতে এসে যেখানে বাংলাদেশের প্রায় সব জায়গায় উন্নয়নের ছোয়া লাগছে এবং আস্তে আস্তে গ্রামের সাথে শহরের বৈষম্য দিন দিন কমে আসছে সেখানে কোটা পদ্ধতি বহাল রাখা আসলেই মেধাবীদের প্রতি অন্যায় এবং অযৌক্তিক । আমি একটা জিনিস বুঝি না যে শিক্ষার্থীরা যদি মেডিক্যাল , বুয়েট এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিযোগিতামুলক ভর্তি পরীক্ষায় মেধা এবং যোগ্যতা দিয়ে নিজেদের জায়গা নিজেরা করে নিতে পারে সেখানে বিসিএস এ তাদের জন্যে কোটা রাখার আদৌ কি কোন দরকার আছে , একদিক থেকে বিবেচনা করলে এইটা কিন্তু ওদের প্রতি এক ধরনের করুনা যা তাদের যোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে ।
আসুন এইবার একটু পরিসংখ্যান এর দিকে তাকাই , ৩১ তম বিসিএস পরীক্ষায় মুক্তিযোদ্বা কোটায় সংরক্ষিত আসন ছিল ৮৬৫ টি, ৩২ তম পরীক্ষায় ছিল ২২০২ টা, এবং ৩৩ তম তে ছিল ২৭০২ টি এবং এর মধ্যে ৩১ তম তে পরীক্ষার পর আসন ফাঁকা ছিল ৫৪৩ টা (৬৩ %), ৩২ তম তে খালি ছিল ৮১৭ (৩৭%) টা এবং ৩৩ তম তে খালি ছিল ২২৭৭ টা (৮৪%) । সামগ্রিকভাবে কোটায় সংরক্ষিত আসনের মধ্যে ৩১ তম পরীক্ষায় প্রায় ৪৮ ভাগ, ৩২তম পরীক্ষায় ৪০ ভাগ , ৩৩ তম পরীক্ষায় প্রায় ৬১ ভাগ আসন ফাকা ছিল (BPSC‟s Annual Report 2012 and 2013) । এইখান থেকে এটা স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে কোটার জন্যে যে আসন বরাদ্ধ থাকে তার অর্ধেকেই ফাকা রাখতে হয় যোগ্য প্রার্থী না পবার কারণে । মুক্তিযোদ্ধা কোটা এখন হয়ে গেছে একটা রাজনৈতিক এজেন্ডা, যেখানে কোটা পদ্ধতির আধুনিকায়ন এবং সময়োপযগী করা এখন সময়ের দাবি সেইখানে কিছুদিন আগে এইটা সংস্কার করে বলা হয়েছে যে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান না পাওয়া গেলে নাতি পুতি দিয়ে এই কোটা পুরন করা হবে । অথচ বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে মেধাভিত্তিক নিয়োগ এবং প্রমোশন জনপ্রশাসনের কাজের গতি বাড়িয়ে দেয় এবং সেখানে আমরা মেধাহীনদের প্রাধান্য দিয়ে একটা অথর্ব জনপ্রশাসন তৈরি করছি । এইটা স্পস্টত মেধাবীদের প্রতি একধরনের অবিচার এবং এই সিস্টেম মেধাবীদের পাবলিক সার্ভিস এ ঢোকার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাঁধা । আর একটি গবেষনার প্রাপ্ত তথ্য মতে, শতকরা প্রায় ৭২ % ভাগ কারেন্ট সিভিল সারভেন্ট মনে করেন যে বর্তমান নিয়োগ পক্রিয়া স্বচ্ছ না এবং এইটার পরিবর্তন দরকার এবং ৮০ ভাগ প্রসপেক্টিভ সিভিল সারভেন্ট মনে করেন যে শতকরা ৬০- ৮০ ভাগ পোস্ট মেধা ভিত্তিক হওয়া দরকার ।
..এখন আলোচনা করব বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নপত্র এবং পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে..
সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল যে বিসিএস ই একমাত্র চাকুরী যেখানে অধিকাংশ ক্যান্ডিডেট আবেদন করার সময় জানেই না তার জব রেসপনসিবিলিটি কি কারন বিজ্ঞাপনে কোন জব ডেসক্রিপশন দেওয়া থাকে না । অর্থাৎ যে ছেলেটি আজকে ডিগ্রি পাস কোর্স কিংবা ইতিহাস পড়েছে সে অনায়াসে কাস্টম কিংবা ফরেন ক্যাডারে চলে যেতে পারবে । মানে হল এইখানে স্পেশিয়ালাইজেশন এর কোন দরকার নেই , বিষয় ভিত্তিক জ্ঞান থাকাটা এইখানে কোন আবশ্যক বিষয় না এবং এই কারনেই অনেকে ক্যাডার হবার পরে বেসিক টারমিনলজি গুলোও ঠিকমত বুঝতে কিংবা বলতে পারে না । শিক্ষকদের ক্ষেত্রে কিন্তু এইটা একেবারেই উল্টা , একজন সমাজবিজ্ঞানের ছাত্র কিন্তু কোনভাবেই ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক হতে পারবে না । এই কথাটা এই কারনেই বললাম বিশ্বের প্রায় সব উন্নত দেশেই সিভিল সার্ভিস এ টেকনিক্যাল নলেজ, বিষয় ভিত্ত্বিক জ্ঞান এবং ফলাফল কে গুরুত্ব দেওয়া হয় আমার কথা বিশ্বাস না হলে সুইডেনের স্টেট সেক্রেটারি এবং অন্যান্য সেক্রেটারির বায়োডাটা দেখে নিতে পারেন এই লিঙ্ক এ গিয়ে (http://www.government.se/government-of-sweden) । একটা ঘটনা শেয়ার করি, কয়েকদিন আগে আমাদের এক স্যার ইউএস এর বাংলাদেশ এম্ব্যাসিতে গিয়েছিলেন পাসপোর্ট এর আবেদন করানোর জন্যে , তো যিনি আবেদন জমা নিবেন উনার ভাব এবং ব্যাবহার দেখে মনে হল কোন চোর বাটপার উনার কাছে আসছে করুণা ভিক্ষা করার জন্যে কিন্তু কিছুক্ষণ পরে একজন বিদেশি যখন একটা তথ্য জানার জন্যে ইংরেজিতে উনাকে প্রশ্ন করল উনি তখন বোয়াল মাছের মত হা হু শুরু করে দিলেন, মহিলার কথা আগামাথা কিছুই বুঝেনা এই হল অবস্থা । যোগ্য লোক যদি যোগ্য জায়গায় না থাকে তাইলে প্রশাসনিক কাজে কখনই গতি আসেনা এবং এবং এইটা কিন্তু কোন বিচ্ছিন্ন ঘঠনা এবং এই ধরনের অভিজ্ঞতা আমার এক বন্ধুরও হয়েছিল বাংলাদেশ এর সুইডিশ এম্ব্যাসেতি ।
কয়েকদিন আগে পি এস সির সাবেক চেয়ারম্যান সাদ'ত হুসাইন একটা সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে বিসিএস এ নাকি ক্লাস ৮/৯ স্ট্যান্ডার্ডের প্রশ্ন করা হয় এবং এর থেকে বর্তমানে ক্লাস এইটের জে এস সি পরীক্ষায় যে প্রশ্ন হয় তাও অনেক ভাল , প্রশ্ন দেখলে মনে হয় যে খুব দয়া করে এই প্রশ্ন করা হয়েছে যাতে সবাই পাশ করে । আন্ডার ম্যাট্রিক কারিকুলাম থেকে যদি প্রিলির প্রশ্ন হয় তাইলে সরকারের এত টাকা খরচ করে ছাত্রদের অনার্স মাস্টাস করানোর কি দরকার, সব কলেজ আর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিলেই হয় । এতে করে সরকার জিডিপির যে ২% শিক্ষাখাতে বরাদ্ব দিয়ে থাকে সেই টাকা দিয়ে আমলাদের জন্যে নতুন করে কিছু সুযোগ সুবিধা দেওয়া সম্ভব, তারপরেও যদি উনাদের দুর্নীতি একটু কমে ? একটা ঘঠনা শেয়ার করি, আমার এক বন্ধু ছিল যে অংকে খুবই দুর্বল এবং এই কারনে সে বিসিএস পরীক্ষার সময় বাংলা এবং সাধারণ জ্ঞান বেশি করে মুখস্থ করত কারন প্রিলি তে সব বিষয়ে আলাদা আলাদা পাশ করতে হয় না । আবার লিখিত পরীক্ষা নিয়ে সবচেয়ে বড় যে অভিযোগ সেটা হল যে এখানে সনাতনী পদ্বতিতে পরীক্ষা হয় , প্রতি বছর প্রশ্নের প্যাটার্ন একই থাকে এবং বাজারে যেহেতু প্রচলিত গাইড বই পাওয়া যায় এতে করে পূর্ববর্তী বছরের প্রশ্ন থেকে ধারনা নিয়ে একটা ভাল প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব এবং অধিকাংশ প্রার্থী সমীক্ষা গাইড মুখস্থ করে উত্তরগুলো পরীক্ষার খাতায় যান্ত্রিকভাবে লিখে দিয়ে আসে এবং পাশ করে ফেলে। যেহেতু এইখানে প্রবন্ধ লিখা টাইপের প্রশ্ন করা হয় সেহেতু এই ধরণের পরীক্ষা পদ্বতিতে একজন ছাত্রের সৃজনশীলতা এবং বিশ্লেষণ দক্ষতা মূল্যায়ন করার বিন্দুমাত্র কোন সুযোগ নেই (জাহান, ২০১২) অথচ এই দুইটা প্যারামিটারই হচ্ছে মেধা যাচাইয়ের জন্যে আন্তর্জাতিকভাবে সবচেয়ে স্বীকৃত এবং গ্রহণযোগ্য পদ্বতি । আমার এক বন্ধু সে ন্যাশনাল ভার্সিটিতে পড়ত , তো তাকে দেখতাম সেকেণ্ড ইয়ার এ উঠার পর থেকেই বিসিএস এর প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছে এবং তার একাডেমিক বইয়ের চেয়ে তার টেবিলে বিসিএস এর প্রিপারেশন গাইড ই ছিল বেশি ,কারন তাদের তেমন কোন ক্লাস করতে হয় না , পরীক্ষার আগে তিনমাস পড়লেই হয় এবং যে দীর্ঘ ৪ টি বছর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেমেয়েরা একাডেমিক লোড নিয়া দৌড়ের উপর থাকে সেখানে চার বছর এরা বিসিএস এর সব বই মুখস্থ করে ফেলে এবং তারই ফলশ্রুতিতে আমরা দেখি যে ৩৪ তম বিসিএস পরীক্ষায় ঢাকা কলেজের অবস্থান সরকারি কলেজে প্রথম , পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি কলেজ মিলে ঢাকা কলেজর অবস্থান সারা দেশে দ্বিতীয় । এছাড়া, দুর্নীতি এবং স্বজনপ্রীতি অলরেডি নিয়োগ পক্রিয়ার একটি অংশ হয়ে গেছে যদিও সাম্প্রতিক সময়ে এইটা অনেকটা কমেছে কিন্তু এখনও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তর । ভাইবাতে নাকি সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয় এবং টাকা দিয়ে ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে নিয়োগ পক্রিয়াকে প্রভাবিত করার অসংখ্য নজির আছে এবং এই কারণে ২৭তম বিসিএস পরীক্ষার প্রকাশিত ফলাফল বাতিল করে নতুন করে মৌখিক পরীক্ষা নেয়া হয়েছিল । । যে পদ্ধতিতে মৌখিক পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে তা বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে অনেক দিন আগেই এবং একজন ছাত্রকে ইচ্ছে করলেই মৌখিক পরীক্ষায় ফেল করানো সম্ভব কারন এইখানে শুধু মৌখিক পরীক্ষায় প্রার্থীর প্রাপ্ত নম্বর ছাড়া আর কি ধরনের প্রশ্ন করা হয় তার কোন রেকর্ড থাকে না । আর মৌখিক পরীক্ষার যেহেতু কোন সিলেবাস নেই তাই প্রশ্নকর্তা ইচ্ছে করলে যেকন ধরনেরই প্রশ্ন করতে পারেন। এখন যদি একজন ফরেস্ট্রি ক্যাডারকে জিজ্ঞেস করা হয় জেমস বণ্ড এর পরবর্তী সিরিজ যে বন্ড গার্ল হবে তার বয়স কত এবং পরীক্ষার্থী যদি সেটা না বলতে পারে তাহলেও কিন্তু তাকে ফেল করানো সম্ভব যদিও এই প্রশ্নের সাথে তার মেধা কিংবা ক্যাডারের কোনই সম্পৃক্ততা নেই । এর পাশাপাশি প্রশ্নপত্র ফাঁস তো আছেই, এমনকি প্রশ্নপত্র ফাঁসের কারণে ২৪ তম বিসিএস বাতিলও করতে হয়েছিল । কাজেই যারা টাকা দিয়ে ক্যডার হয় তারা স্বাভাবিক ভাবেই ধান্দায় থাকবে কিভাবে এবং কত দ্রুত এই টাকা জনসাধারনের পকেট থেকে খসানো যায়।
কিছুদিন আগে একটা পত্রিকায় দেখলাম যে বাংলাদেশ সরকারের ১৭ জন অতিরিক্ত সচিব ও ৩৭ যুগ্ম-সচিব নাকি শিক্ষা জীবনে একাধিক তৃতীয় বিভাগসহ টেনেটুনে পাস করেছেন এবং এর মধ্যে অনেকেই আবার মানহীন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষার সার্টিফিকেট নিয়ে পদোন্নতিতে কাজে লাগিয়েছেন । সাবেক পিএসসি চেয়ারম্যান সাদ'ত হুসাইন বলেছেন যে অনেক যুগ্ন সচিব , অতিরিক্ত সচিব কোন মিটিং এ ভাল করে ইংরেজি কিংবা বাংলায় কথাই বলতে পারেন না; এখন একজন এডমিন অফিসার যদি ঠিকমত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে ফরেন ডেলিগেটদের সাথে কমিউনিকেট-ই করতে না পারেন তাহলে উনি দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যাপারে অন্যদের সাথে কিভাবে নেগোসিয়েশন করবেন এবং DFID এর একটি প্রতিবেদনেও বলা হয়েছে যে বাংলাদেশের আমলারা বিদেশী বিনিয়োগ প্রাপ্ত প্রজেক্ট বাস্তবায়নে একেবারেই অক্ষম। এর মধ্যেও নিশ্চয়ই অসংখ্য যোগ্য ব্যাক্তি আছেন কিন্তু আনুপাতিক হার বিবেচনা করলে একটা দেশের জনপ্রশাসনকে গতিশীল করার জন্যে এইটা আসলেই অপ্রতুল। যাই হোক, মোদ্বা কথা হল আমাদের দেশে সনাতনী পদ্ধতিতে যেভাবে বিসিএস পরীক্ষা নেওয়া হয় তার আসলেই একটা আমুল পরিবর্তন করা দরকার কারন পরীক্ষা গ্রহণের মান ও পদ্ধতি উন্নত ও আধুনিকায়ন হলে এবং সর্বক্ষেত্রে সচ্ছতা ও জবাবাদিহিতা নিশ্চিত করতে পারলে অবশ্যই সত্যিকারের মেধাবীদের এই পেশায় আকৃষ্ট করা সম্ভব ।
Swedish University of Agricultural Sciences
Uppsala, Sweden
Published in: https://www.facebook.com/sourav.swopno/posts/10205044241406118
আরো পড়ুন:
১১ অতিরিক্ত সচিব, ১৭ যুগ্ম-সচিবের একাধিক তৃতীয় বিভাগমেধা পরিমাপের সূচক এবং একটি হাইপোথেসিস
শিক্ষার ঋণে আনন্দভ্রমণ!
'শিক্ষাদানের অভিজ্ঞতা' নিতে আমলারাও যাচ্ছেন বিদেশে - শিক্ষক-শিক্ষাবিদরা সুযোগ পান না
সংস্কারের বিকল্প নেই
ঔপনিবেশিক জনপ্রশাসন এবং ক্যাডার সার্ভিস সংস্কার
'শিক্ষাদানের অভিজ্ঞতা' নিতে আমলারাও যাচ্ছেন বিদেশে - শিক্ষক-শিক্ষাবিদরা সুযোগ পান না
সংস্কারের বিকল্প নেই
ঔপনিবেশিক জনপ্রশাসন এবং ক্যাডার সার্ভিস সংস্কার
0 comments:
Post a Comment