এক
কয়েকবছর আগের কথা | আমি তখন মনাশে | পোস্ট ডক করি |
আমার সাথে তার কথা শুরু হলো একগুছ প্রশ্ন দিয়ে - ও আপনি কেমেস্ট্রিতে পিএইচডি করেছেন ? কেমেস্ট্রি পড়ে কি হবে বলুন? মাস্টারি করবেন তো? এখনকার ছেলেমেয়েরা কী কেমেস্ট্রি পড়তে যায়? বাংলাদেশেতো কেমেস্ট্রিতে যারা পাশ করে তারা মাস্টারি ছাড়া আর ভালো কিছু পায় না- আপনাদের এদিকের কী অবস্থা ? এখানে কি ভালো স্টুডেন্টরা কেমেস্ট্রি পড়ে? মাস্টারী করে সংসার চলে কিভাবে ?
আমি সেদিন কিছুই বলিনি - শুধু তার মুখের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে ছিলাম | আফটার অল বাংলাদেশ সরকারের সেক্রেটারী, এত্তো বড় পন্ডিত ! সবাই স্যার স্যার ডাকে ! বিশাল এক দল নিয়ে চলাফেরা করে !
কদিন আগে ঐ মহাপন্ডিত আমাকে ফোন করলো (কোথা থেকে আমার নাম্বার পেলো আল্লাহ মালুম ) | ইনিয়ে বিনিয়ে যা বললো তার সারমর্ম - তার মেয়েকে পিএইচডি’র স্কলারশীপি পেতে একটু গাইড করতে হবে |
আমি বললাম আপনার মেয়ে কেমেস্ট্রিতে পিএইচডি করে কী করবে? মাস্টারী?
তিনি বললেন, কেন ভাই? প্রফেসরশীপতো খুব ভালো ? কয়জনে ইউনিভার্সিটির প্রফেসরশীপ পায় বলুন? (সবাই একটু খেয়াল করেন - এখন কিন্তু মাস্টারী বলছেন না, প্রফেসরশীপ বলছেন | নিজের মেয়ে এই জবে ঢুকবে বলে কথা !) |
দুই
বছর দুয়েক আগে পরিচিত একজন আমাকে কমুনিটির একটি অনুষ্ঠানে আরেকজনের সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন - এ হলো শামিম, রিসার্চ ফেলো | গবেষণা করে এবং করায় | তার নিজের কয়েকটি প্রজেক্ট আছে | কয়েকজন বাংলাদেশি পিএইচডি’র ছাত্রও আছে |
যার সাথে পরিচিত হলাম সে আমাকে এমন ভাবে ট্রিট করা শুরু করলো যেন গবেষণা করাটা একটি চোর বাটপার বা সুইপারদের কাজের চেয়েও নিন্ম শ্রেণীর কিছু একটা |
আরে ভাই এই পিএইচডি টিএইচডি করে কি লাভ ? আর গবেষণায় কি আছে? ইউনিভার্সিটিতে কি গবেষণা হয়? এরা শুধু পেপার করে | কোন কিছু না করলেও তিন বছর পরে ডিগ্রী দিয়ে দেয় | আর মাস্টারী করে কয় টাকা ইনকাম হয় ?
আমি মুছকি হাসলাম | কী বলবো ? ছাত্রদের সুযোগ পেলেই যেখানে নৈতিক মানসিক সামাজিক সবদিক দিয়ে বেড়ে উঠার কথা বলি, আর সেখানে এই মূর্খের সাথে কী বলবো ?
খুব ইচ্ছা হচ্ছিলো ওকে বলি – স্কুল ইউনিভার্সিটি গবেষণার সিড়ি বেয়েইতো তুমি আজ এখানে | তুমি এক কাজ করো - শিক্ষকরা যেহেতু খারাপ, গবেষণায় যেহেতু কিছু হয় না - তুমি তোমার সন্তানদের স্কুল ইউনিভার্সিটিতে না পাঠিয়ে গাড়ি মেকানিকের গেরেজে পাঠিও | কাজে দিবে |
বি দ্রঃ
আমরা যারা শিক্ষকতা করি তাঁদের কাছে মান সম্মানটাই বড় | ছাত্ররা ভালো করবে- নেতা হবে, মন্ত্রী হবে, আমলা হবে, বিজ্ঞানী হবে, সাংবাদিক হবে, শিল্পী হবে, অভিনেতা হবে - এটাই তো আমাদের প্রত্যাশা |
ছাত্রদের সফলতায় কোন শিক্ষক গর্বিত হোন না? আমি আমার প্রাইমারী এবং হাইস্কুলের অনেক শিক্ষকদের বৃত্তি বা এসএসসি পরীক্ষার রেজাল্টের দিন আনন্দে কাদঁতে দেখেছি |
Muhammad J. A. Shiddiky, Faculty Member, Griffith University
প্রথম চিড়িয়াটার হলো আংগুর ফল টক অবস্থা। তবে তার মেয়ের কিন্তু টক পছন্দ!
ReplyDeleteআর দ্বিতীয়টা হলো অজ্ঞ কুটিল।