Saturday, October 10, 2015

ঢাবি ও বুয়েটকে বিশেষ মর্যাদার দিতে চেয়েছিলো বেতন কমিশন

হাসান আরিফ 

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য পৃথক বেতনকাঠামো না দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েটকে আলাদা মর্যাদা দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল জাতীয় বেতন কমিশন।

কমিশন মনে করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্বনির্ভরশীল হলে তাদের আলাদা বেতনকাঠামো দেওয়া যেতে পারে। নয়তো তাদের সরকারি বেতন কাঠামোর অধীনেই থাকতে হবে।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, কমিশন বলেছে, সরকারি অনুদানের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে আর্থিকভাবে সম্পূর্ণ স্বাবলম্বী না হওয়া পর্যন্ত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য স্বতন্ত্র বেতনকাঠামো প্রণয়ন যুক্তিযুক্ত হবে না। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েটকে বিশেষ অর্থাৎ উচ্চতর মর্যাদা দেওয়া যেতে পারে।

একই সূত্রে জানা গেছে, সরকারি মঞ্জুরিপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতনকাঠামো বিষয়ে বলতে গিয়ে কমিশন বলেছিল, উচ্চতর শিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারিত করার লক্ষ্যে সরকার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি বেসরকারি খাতে বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় অনুমতি দিয়েছে। বেসরকারি খাতে পরিচালিত এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব উচ্চতর বেতনকাঠামো চালু থাকলেও সরকারি মঞ্জুরিপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষকরা সরকারি বেতনকাঠামোর অনুরুপ বেতন-ভাতাদি পেয়ে থাকেন।

কমিশন তাদের রিপোর্টে বলেছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা একটি দায়িত্বপূর্ণ পেশায় নিয়োজিত থেকে শিক্ষার্থীদেরকে উচ্চতর শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলেন। তাদের এই বিশেষায়িত পেশার কারণে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা উচ্চতর বেতন স্কেল সম্বলিত স্বতন্ত্র বেতনকাঠামো প্রত্যাশা করেন। কিন্তু সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী না। বরং সম্পূর্ণভাবে সরকারি মঞ্জুরির ওপর নির্ভরশীল।

এ অবস্থায় কমিশন মনে করে যে, সরকারি অনুদানের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে আর্থিকভাবে সম্পূর্ণ স্বাবলম্বী না হওয়া পর্যন্ত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য উচ্চতর বেতন স্কেলের আলাদা বেতন কাঠামো প্রনয়ন করা সমীচীন হবে না। তবে দেশ ও জাতির অগ্রবর্তী চলার পথে বিশেষ ও নিরন্তর অবদানের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েটকে বিশেষ মর্যাদা দানের বিষয়ে বিবেচনা করা যেতে পারে।

এদিকে পৃথক বেতন কাঠামো ও অষ্টম জাতীয় বেতন স্কেলে গ্রেড সমস্যা নিরসনের দাবিতে শিক্ষকরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষকদের একাধিকবার বৈঠক হলেও প্রতিটি বৈঠক কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষে হয়।

প্রতিটি বৈঠক শেষে শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষা পরিবারের সদস্য হিসেবে তিনি শিক্ষ?কদের দাবির বিষয়গুলো শুনেছেন। এখন তিনি এগুলো বেতন বৈষম্য নিরসন সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির কাছে উপস্থাপন করবেন। শিক্ষকদের মান মর্যাদা যাতে অক্ষুণœ থাকে তা তিনি চেষ্টা করবেন। তার কাছে শিক্ষকদের মান অনেক ওপরে। কারণ শিক্ষাটা নির্ভর করে শিক্ষকদের মান মর্যাদার ওপর।

আর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, চলতি মাসের মধ্যে দৃশ্যমান কিছু না হলে তাদের ওপর ১ নভেম্বর থেকে লাগাতার কর্মসূচির চাপ আছে। তবে আশা করেন তা করতে হবে না।

ফেডারেশনের মহাসচিব এএসএম মাকসুদ কামাল বলেছেন, ৩০ অক্টোবরের মধ্যে দাবি মানা না হলে ১ নভেম্বর থেকে লাগাতার কর্মবিরতি? দেওয়া সিদ্ধান্ত হয়েছে ফেডারেশনের সভায়।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আন্দোলন সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্যে মর্মাহত শিক্ষকেরা। তারা মনে করেন, স্বার্থান্বেষী মহল শিক্ষকদের সম্পর্কে ভুল তথ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে বিভ্রান্ত করায় তিনি শিক্ষকদের সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন।

উল্লেখ, গত রোববার গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলনরত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। 

সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ

Published in: http://www.banglaconverter.com/bijoy2unicode.php

আরো পড়ুনঃ

0 comments:

Post a Comment