স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো ও বেতন বৈষম্য দূরীকরণের দাবিতে আন্দোলনে মাঠে রয়েছেন সাড়ে ৩ লাখের বেশি শিক্ষক। দাবি আদায়ে মানববন্ধন, ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন, কর্মবিরতিসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছেন। ঈদ বিরতির পর আবারো আন্দোলনে যাচ্ছেন তারা। নভেম্বরে অনুষ্ঠিত প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা বর্জনের হুমকি দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষকরা। আর দাবি না মানলে আসন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়া থেকে বিরত থাকবেন এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে শিক্ষামন্ত্রীর আলোচনা হলেও সমঝোতা হয়নি। ফলে আন্দোলন থেকে সরে যাচ্ছেন না শিক্ষকরা। আন্দোলনের অংশ হিসাবে আসন্ন ভর্তি পরীক্ষাও বর্জনের হুমকি দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফেডারেশনের মহাসচিব অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষামন্ত্রী ডেকেছেন তাই আমরা গিয়েছিলাম। আমাদের ক্লাসরুমে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করেছেন। আমরা বলেছি, আন্দোলন ও আলোচনা একসঙ্গে হবে। আন্দোলনরত শিক্ষকরা বলেন, দাবি পূরণ না হলে আন্দোলন থেকে সরে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। শিক্ষকরা মনে করেন, আন্দোলনই দাবি আদায়ের একমাত্র পথ, তাই আন্দোলনে থাকতে হবে। পাশাপাশি আলোচনাও চালিয়ে যেতে হবে। ঈদের ছুটিশেষে আবারো আন্দোলন শুরু হবে।
কলেজ
সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল বাদ দেয়ার প্রতিবাদে আন্দোলনের মাঠে রয়েছে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি। কর্মসূচির অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে সারাদেশে দুই দফা কর্মবিরতি পালন করেছেন তারা। কর্মসূচির অংশ হিসাবে আগামী ৭ অক্টোবর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মানববন্ধন করবেন। এছাড়া ১৪ ও ১৫ অক্টোবর ক্লাস বর্জন কর্মসূচি দেয়া হয়েছে। শিক্ষকরা বলছেন, ঘোষিত পে-স্কেলে শিক্ষা ক্যাডারে গ্রেড কয়েক ধাপ কমিয়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়া সিলেকশন গ্রেড বাতিল করায় শিক্ষকরা আরও বৈষম্যের শিকার হবেন। এই বৈষম্য নিরসনে সরকারের কাছে দাবি জানানো হয়েছে। দাবি না মানায় আন্দোলন হচ্ছে। ঈদের পর আরো কঠোর আন্দোলন করা হবে।
প্রাথমিক
বেতনবৈষম্য কমানোসহ ৭ দফা দাবিতে কর্মসূচি পালন করেছে সরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। বেতন গ্রেড ১১তম ধাপে পুনর্নিধারণসহ ১১ দফা দাবিতে কঠোর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের দাবি না মানা হলে অক্টোবর থেকে লাগাতার কর্মসূচি দেয়া হবে।
এছাড়া প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তার পদমর্যাদা বাস্তবায়ন ও জাতীয় বেতন স্কেলের ১০ম গ্রেডে অন্তর্ভুক্তকরণসহ পাঁচ দফা দাবিতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। প্রধান শিক্ষক সমিতির নেতা আলাউদ্দিন মোল্লা জানান, প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দেয়ার দেড় বছরেও প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদা ও বেতন স্কেল দেয়া হয়নি। ৮ম বেতন কাঠামোতে ১০ম গ্রেডে অন্তর্ভুক্তসহ দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তা হিসেবে ঘোষণা না দেয়া হলে ঈদের পর আমরা কর্মসূচিতে যাবো।
একই দাবিতে ৮ম বেতন কাঠামোতে গ্রেড ও টাইম স্কেল পুনর্বহাল, প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত দ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদা বাস্তবায়ন, ১০ গ্রেডে প্রধান শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করাসহ বিভিন্ন দাবিতে লাগাতার কর্মবিরতির হুমকি দিয়েছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির আহবায়ক রিয়াজ পারভেজ বলেন, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আমাদের দাবি পূরণ না হলে দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আগামী ৩ থেকে ৫ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করা হবে। এরপরও দাবি বাস্তবায়ন না হলে আগামী ৬ অক্টোবর থেকে লাগাতার কর্মবিরতি চলবে।
Source: http://www.ittefaq.com.bd/national/2015/09/24/37259.html
0 comments:
Post a Comment