পুরাতন অর্থাৎ ৭ম বেতন স্কেলে শিক্ষক এবং আমলার টাকা পয়সা ও সুযোগ সুবিধায় ব্যাপক বৈষম্য ছিল। তথাপি শিক্ষকরা সেই বৈষম্যের বিরুদ্ধে কখনও কোন আন্দোলন বা দাবি তুলেননি। আমার সহপাঠি এখন যুগ্ম-সচিব। কিছুদিন আগে ওই পদে প্রমোসন পাওয়ার পর ফোন করেছিল। আলাপের এক পর্যায়ে বলছিল ও প্রতিমাসে গাড়ী maintenance-এর জন্য ৪৫ হাজার টাকা পায়। গাড়ী কেনার জন্য ব্যাংক লোন সুবিধা পেয়েছে। আমরা শিক্ষকরাতো সেগুলোর দিকে তাকাই নি। এতে কি প্রমানিত হয় না যে, শিক্ষকরা টাকা নয় সম্মানের দিকে বেশি মনোযোগী। আগের পে-স্কেলেই আর্থিক বৈষম্য ছিল। বর্তমান বেতন স্কেলেও তারা তাদের সুযোগ সুবিধা আরো বাড়ালে আমার মনে হয় শিক্ষকরা কোন আপত্তি করত না। কিন্তু আঘাত যে এসেছে সম্মানে। এটাতো কোন ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না, যাবে না। সরকারকে বুঝতে হবে সব কিছুইতো ঠিক ছিল। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোথাও তেমন কোন বিশৃঙ্খলা ছিল না। হঠাত করে গোটা শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে কেন এমন বিশৃঙ্খলা তৈরী হলো? কারা এর জন্য দায়ী?
একটু চিন্তা করলেই সহজেই অনুমেয় যে, একজন ভূতপূর্ব এবং দুয়েকজন বর্তমান আমলা আজকের এই অশান্ত পরিস্থিতির জন্য দায়ী। এদের কর্ম কান্ড দেখলে মনে হয় এরা চায় না এদেশের মানুষ সুশিক্ষিত হউক। অথচ এরকম মানুষজনদের হাতেই আজ গোটা শিক্ষা ব্যবস্থার দায়িত্ব। শিক্ষকদের সম্মানের হানি ঘটিয়ে সরকারের কি এমন লাভ হয়েছে? প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেমন ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে VAT বসিয়ে সরকার কত টাকা ট্যাক্স বেশি পাবে আর এতে কত মানুষ হার্ট হবে? সরকার কি সেই হিসাব কষে দেখেছে? হাজার হাজার কোটি টাকা যখন ব্যাংক থেকে লুটপাট হয় তখন সরকারের অর্থমন্ত্রী বলেন সেই টাকা এমন কোন টাকা না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে অর্জিত হবে বড়জোড় ৫০ কোটি টাকা। এই পরিমান বা কিছু অধিক পরিমান টাকা আজ সরকারের কাছে এত প্রয়োজনীয় হয়ে উঠল কেন? এসব উত্তর জানতে সরকারকে আজ কিছু সহজ যোগ বিয়োগ অংক কষতে হবে। ভাবুন এবং ভেবে সিদ্ধান্ত revise করুন। এখনও সময় আছে damage-কে minimize করার!!!
কামরুল হাসান
অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
0 comments:
Post a Comment