গতকাল সোমবার প্রথম আলোর সঙ্গে সাক্ষাৎকারে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বেতনবৈষম্য নিরসনে গঠিত মন্ত্রিসভা কমিটির প্রতি আস্থা রাখার জন্য আন্দোলনরত শিক্ষকদের প্রতি যে আহ্বান জানিয়েছেন, তার সঙ্গে আশা করি সংশ্লিষ্ট শিক্ষকেরাও দ্বিমত করবেন না। তবে এ ক্ষেত্রে সরকারকেই অধিক দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে।
শিক্ষামন্ত্রী সমস্যা সমাধানে আলোচনার ওপর গুরুত্ব দিলেও সেটি কীভাবে এগোবে, আলোচনা শেষ হতে কত দিন লাগবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছু বলেননি। শিক্ষকনেতারা শুরু থেকেই আলোচনার তাগিদ দিয়ে আসছেন। বরং সরকারের পক্ষ থেকেই এ ব্যাপারে সাড়াটি এসেছে বেশ বিলম্বে। কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরাই নন, আন্দোলনে আছেন বা আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন কলেজ, মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরাও। তাঁদের দাবি অযৌক্তিক, সে কথা বলা যাবে না। তাঁরা আগের বেতনকাঠামোর সুযোগ-সুবিধা বহাল রাখার কথা বলছেন। নতুন করে কোনো দাবি উত্থাপন করেননি।
শিক্ষক আন্দোলনের বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্বের সঙ্গে দেখা উচিত এ কারণে যে এর সঙ্গে লাখ লাখ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন জড়িত। অক্টোবর থেকে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি-প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা। পাশাপাশি অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বার্ষিক পরীক্ষার বিষয়টিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিরোধী দলের হরতাল-অবরোধের কারণে বছরের প্রথম তিন মাস শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে। বছরের শেষে এসে তার পুনরাবৃত্তি কাম্য নয়।
দুর্ভাগ্যজনক যে, বেতন কমিশন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দ্বিগুণ করলেও শিক্ষকদের প্রতি সদয় হতে পারেনি। প্রতিবেদন ঘোষণার আগে কমিশন শিক্ষকদের সঙ্গে বসলেও কেন তাঁদের ন্যায়সংগত দাবিদাওয়া আমলে নেওয়া হলো না, সেটিই বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সরকারের উচিত কমিশনের ভুলটি দ্রুত শুধরে নেওয়া। মন্ত্রিসভা কমিটির প্রধান অর্থমন্ত্রী এখন দেশের বাইরে। তিনি দেশে ফেরামাত্র শিক্ষকনেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসে সমস্যার সমাধান বের করা দরকার। এ ব্যাপারে সময়ক্ষেপণ বা আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রতা শিক্ষাঙ্গনে ফের অস্থিরতা ডেকে আনতে পারে।
published in: http://www.prothom-alo.com/opinion/article/641464/
0 comments:
Post a Comment