তাঁর পিঠে রক্তজবার মতো ক্ষত ছিলো কারন তিনি ক্রীতদাস ছিলেন। তিনি কত ভাগ্যবান- তাঁর উত্তর পুরুষ তাঁর বেদনাকে অনুভব করেছেন, গভীর অনুভব থেকে তাঁর বেদনার কথা সবাইকে জানিয়েছেন।
আমার, আমাদের মনেও রক্তজবার মতো ক্ষত আছে......। আমরা শিক্ষক, মুক্তচিন্তার মানুষ। সারাবিশ্ব থেকে জ্ঞান আহরন করে কত মমতা দিয়ে আমরা আমাদের উত্তরপুরুষের হাতে জ্ঞান/আলোর দীপাবলী তুলে দিই। গভীর আনন্দে চোখ ঝাপসা হয়ে আসে যখন দেখি- আমাদের উত্তরপুরুষেরা সেই দীপাবলী হাতে নিয়ে আলোর মিছিলে হাঁটছেন......জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিল্প, সংস্কৃতিতে দেশকে উত্তরোত্তর সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে লাল-সবুজের পতাকাকে সম্মানের আসনে গেঁথে দিচ্ছেন। আমরা, শিক্ষকরা উত্তরপুরুষের এই সাফল্য-সমৃদ্ধিটুকু দেখেই খুশী। আমাদের, শিক্ষকদের মনের স্বর্গীয় এই অনুভবে ঈর্ষার কোন স্থান নেই; যেমন থাকে না বাবা-মায়েদের মনে-সন্তানের সাফল্য-সমৃদ্ধিতে । সেই শিক্ষকদের মনে রক্তজবার মতো এই যে একটি ক্ষত আছে, সেই ক্ষতের কথা আমাদের উত্তরপুরুষেরা কখনও কি কেউ অনুভব করেছেন? অনুভব করতেই হবে- এমন দাবী নেই। শিক্ষকদের মনের রক্তজবার মতো ক্ষতের কথা আমাদের উত্তরপুরুষেরা এখনও কেউ বলেননি......। বলতেই হবে- এমনও নয়। তবে শিক্ষকদের অধিকার নিশ্চয়ই আছে- নিজেদের আত্মমর্যাদার কথা বলবার, নিজেদের সম্মানের জন্য দু-দন্ড কোথাও দাঁড়াবার। নিজেদের আত্মমর্যাদা, নিজেদের সম্মানের কথা বলাটা নিশ্চয়ই অন্যায় কিছু নয়। শিক্ষকদের যথাযথ সম্মানটুকু অন্ততঃ দিতে না পারলেও তাঁদের অসম্মান করার, অমর্যাদা করার অধিকার কেউ কি রাখেন? যখন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোন শিক্ষককে দেখি- নিজের সম্মানের কথা বলতে এসে রাজপথে মার খান, বুকটা ব্যথায় মুচরে উঠে......মনে পরে যায় আমার নিজের শিক্ষক খালেক স্যার এর কথা। রাজপথে অনশনরত স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের শীর্ণ মুখ দেখলে হৃদয়টা ভেঙে-চুড়ে যায়......মনে পড়ে যায় হরিপদ স্যার, সিরাজ স্যার, করিম স্যার, দেবনাথ স্যারদের কথা। আজ আমি, আমরা- রক্তজবার মতো ক্ষতকে বুকের ভেতরে আড়াল করে রেখে, বিষণ্ণ মন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমীক ভবনের বারান্দায়, বাইরে বসে থাকি......মাঝে মাঝে দলবেঁধে হাঁটি......নিজেদের সম্মানের জন্য, আত্মমর্যাদার জন্য...... আর এটুকু তো আমরা করতেই পারি......। নাকি তাও পারা যাবে না? আমার, আমাদের মনের এই রক্তজবার মতো ক্ষত কি কাউকেই স্পর্শ করে না, করবে না ????????
শিখা ফাতেমা হক
অধ্যাপক, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
শিখা ফাতেমা হক
অধ্যাপক, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
I believe in knocking to heart.........to soul.............
ReplyDeleteReally heart touching, but target person should've a heart at least........
ReplyDeleteHa ha ha, Well said. "should've a heart at least...."
Delete