Friday, May 8, 2015

পদোন্নতির মানদন্ডঃ সময় বনাম যোগ্যতা

Kamrul Hassan

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান কোন যোগ্যতার নিরিখে হয় না, হয় অধ্যাপকদের মধ্য থেকে সার্ভিস length বা seniority ভিত্তিতে। আর বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রমোশনও হয় almost সার্ভিস length বা seniority ভিত্তিতে। একটা সময় ছিল যখন প্রমোশনের জন্য বিদেশী স্বনামধন্য respective বিষয়ের এক্সপার্টদের কাছ থেকে অপিনিয়ন নেওয়া হত। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে আস্তে আস্তে ওই tradition-গুলো বিলুপ্ত করে নিজ দেশের (ক্ষেত্র বিশেষে নিজ দলীয় বা নিজ ধারার) এক্সপার্ট অপিনিয়ন নেওয়া শুরু করি আর তখন থেকেই শুরু হয় avalanche of quality degradation। এখন নেচারে (Nature) পাবলিকেশন আর দেশের কোন এক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত জার্নালে পাবলিকেশন একই মানদন্ডে একই ভাবে দেখা বা মাপা হয়। অর্থাৎ ভালো কাজের reward এবং মন্দ কাজের penalty প্রায় অনুপস্থিত। আমরা ভালো এবং মন্দের পার্থক্য না করাটা প্রায় রীতিতে পরিনত করে ফেলেছি। তারই প্রতিফলন হিসাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগে অধ্যাপকের মাত্রাতিরিক্ত আধিক্য দেখতে পাচ্ছি। প্রতিটি বিভাগে প্রায় ৭০-৮০% শিক্ষক অধ্যাপক। অর্থাত অধ্যাপক হতে পেরে কেউ সেরকম উচ্ছসিত হন না কারণ আমরা সবাই জানি এটা হওয়ার জন্য কষ্ট করতে হয়নি। যে প্রাপ্তিতে যত কষ্ট তা অর্জনে তত আনন্দ এবং গর্ব। আমি নিজে একজন অধ্যাপক এবং এটা নিয়ে আমার তেমন কোন অহম বা গর্ববোধ নেই। কেন জানি মনে হয় না চাইতেই সব পেয়ে গেছি। এটা ডেঞ্জারাস। এর ফলে ভালো কিছু করার স্পৃহা এখন সমাজে প্রায় নেই বললেই চলে। সবাই কেমন জানি short-cut পথ খুঁজে পেতে ব্যস্ত।

ভালো মান নিশ্চিত করতে হলে প্রমোশনকে স্ট্রিক্ট করতে হবে। আমার মতে প্রমোশন এবং বেতন বৃদ্ধি এদুটোকে decouple করা উচিত। একজন শিক্ষক প্রভাষক হিসাবে নিয়োগ পাওয়ার ঠিক তিন বছরের মাথায় সে পেতে পারে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসরের বেতন কিন্তু তাকে ওই টাইটেলটা দেওয়া হবে না যদি না উনার প্রয়োজনীয় সংখ্যক আন্তর্জাতিক প্রকাশনালয় থেকে প্রকাশিত গবেষণা পত্রিকা থাকে। অর্থাত অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর হতে হলে তাকে কষ্ট করতে হবে এবং তবেই কেবল ওই অর্নামেন্টটা পাবেন এবং সাথে পাবেন কিছু ইন্ক্রেমেন্ট। শিক্ষকরা তখন গবেষণায় মন দিবেন। এতে করে ভালো এবং মন্দের মধ্যে পার্থক্য পরিস্কার হবে ফলে ভালো করার জন্য শিক্ষকদের মধ্যে একটা bite থাকবে। এখন দেখতে পাই খারাপদেরই গলা বড়। তখন এটা আর থাকবে না। এই ভাবে যারা প্রমোশন পেয়ে অধ্যাপক হবেন এবং এই অধ্যাপকদের মধ্য থেকে সার্ভিস length বা seniority ভিত্তিতে যখন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন তখন এটা হবে একটা মর্যাদাপূর্ণ পদ। ওই চেয়ারম্যানের কথা তখন সবাই সম্মানের সাথে গ্রহণ করবে। সবাই তখন এটাকে তার অর্জন হিসাবে দেখবে।

কামরুল হাসান
অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

0 comments:

Post a Comment