Monday, July 27, 2015

১১ অতিরিক্ত সচিব, ১৭ যুগ্ম-সচিবের একাধিক তৃতীয় বিভাগ

এবাদুর রহমান

বাংলাদেশ সরকারের ১৭ জন অতিরিক্ত সচিব ও ৩৭ যুগ্ম-সচিবের শিক্ষা জীবনে একাধিক তৃতীয় বিভাগসহ টেনেটুনে পাস করার নির্মম ইতিহাস রয়েছে। এসব র্মকর্তাদের অধিকাংশই প্রশাসন ক্যাডার থেকে পদোন্নতি পেয়ে সরকারের যুগ্ম-সচিব ও অতিরিক্ত সচিব হয়েছেন। শিক্ষাখাতের নানা স্তরে তক্কে তক্কে থাকা দেশের শিক্ষাবিষয়ক একমাত্র অনলাইন জাতীয় পত্রিকা দৈনিকশিক্ষাডটকম’র অনুসন্ধানে জানা যায়, এসব অতিরিক্ত সচিব ও যুগ্ম-সচিবদের অধিকাংশই বিএ/বিএসসি/বিকম পাসকোর্স পাস করে চাকরিতে ঢুকেছেন। পরবর্তীতে তারা সরকারি/মানহীন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষার সার্টিফিকেট নিয়ে পদোন্নতিতে কাজে লাগিয়েছেন। অনেকে অবৈধভাবে চলা বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশের কথিত শাখা থেকে এমবিএ/পিএইচডি/এমফিল ইত্যাদিও নিয়েছেন। তবে সংবাদ মাধ্যমে বিরুপ প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ায় অনেকেই পিএইচডি খেতাব ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকছেন কয়েকজন। তারা তক্কে তক্কে রয়েছেন কবে এসব বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখার অনুমোদন দেবে সরকার তখনই তারাই ওইসব ডিগ্রি নামের আগে ব্যবহার করার শুরু করবেন। ডক্টরেটসহ বিজনেস কার্ড তৈরি করলেও তা ব্যবহার থেকে বিরত থাকছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়াধীন কোনওকোনও যুগ্ম-সচিব ও অতিরিক্তসচিব এমন তথ্য প্রমাণ দৈনিকশিক্ষাডটকম’র হাতে রয়েছে।

১৯৮৪ ব্যাচের যুগ্ম-সচিব মো. আবদুর রাজ্জাক তৃতীয় বিভাগ পেয়ে বিএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। উপ-সচিব থাকাকালে ২০০৬ সালে তিনি প্রাইম ইউনিভার্সিটির অবৈধ একটি শাখা থেকে এলএলবি’র ও পরবর্তীতে এমবিএ’র সার্টিফিকেট যোগাড় করে পদোন্নতি বাগিয়েছেন। যুগ্ম-সচিব তাজুল ইসলাম চৌধুরী ও মোখলেছুর রহমানও অবৈধ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একাধিক ডিগ্রি নিয়েছেন বলে জানা যায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক মন্ত্রীপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী পদে চাকরির জন্য পৃথিবীর কোথাও এক্সট্রাঅডিনারি মেধাবীরা ভীড় জমান না। ট্যালেনটেড যারা তারা আবিষ্কার করেন নতুন কিছু সৃষ্টি করেন। দ্বিতীয় ও তৃতীয় সারির মেধাবীরা সেসব প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে জীবন পার করে দেন। এটা সারা পৃথিবীতেই চলমান। সরকারি চাকরিতে কাজের যে ন্যাচার তাতে খুব মেধাবী লোকের দরকারও নেই। মধ্যম মানের মেধাবী হওয়াই যথেষ্ঠ। তবে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনেক কর্মকর্তা, সচিব, অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম-সচিবসহ অনেক কর্মকর্তাই রয়েছেন মেধাবী। তারা নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে মেধার পরিচয় দেন। এটা দেশের জন্য ভালো।

Published in: http://www.dainikshiksha.com/news.php?content_id=8573

আরো পড়ুন:
বিভিন্ন সরকারী ট্রেনিং এ কারা যায়? কি করে?
শিক্ষার ঋণে আনন্দভ্রমণ!
'শিক্ষাদানের অভিজ্ঞতা' নিতে আমলারাও যাচ্ছেন বিদেশে - শিক্ষক-শিক্ষাবিদরা সুযোগ পান না
সংস্কারের বিকল্প নেই
ঔপনিবেশিক জনপ্রশাসন এবং ক্যাডার সার্ভিস সংস্কার
ক্যাডারের রাজা "প্রশাসন ক্যাডার"
প্রশাসন ক্যাডার দুর্নীতির শীর্ষে!
আমলাতন্ত্রের আমলনামা ও শিক্ষকদের অবমূল্যায়ন

0 comments:

Post a Comment