Saturday, June 27, 2015

উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা

Kamrul Hassan

একটা দেশে কতজন ছাত্র মাস্টার্স করছে আর তার কত অংশ পিএইচডিতে এনরোল হচ্ছে সেটাও শিক্ষার মানের একটা লিটমাস টেস্ট বা ধারণা সুচক হতে পারে। বাংলাদেশে এত এত বিশ্ববিদ্যালয় এত এত ছাত্র কিন্তু এই বিপুল সংখ্যক বিশ্ববিদ্যালয় এবং ছাত্র সত্বেও পিএইচডি ছাত্র প্রায় নেই বললেই চলে। আর পোস্ট-ডক নামে কিছু বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে বলেই মনে হয় না। কেউ এটার প্রয়োজনীয়তাও অনুভব করে বলে মনে হয় না। পিএইচডি এবং পোস্ট-ডক ব্যেতিত উচ্চ শিক্ষা এবং গবেষণা ভাবাই যায় না। আমার বয়সের, আমার মত একজন অধ্যাপকের থাকা উচিত ছিল কমপক্ষে একজন পোস্ট-ডক এবং দুইজন পিএইচডি ছাত্র। এখন একজন ছাত্র কি পিএইচডি করবে বাবার পয়সায়? না। তারজন্য সরকারকে একটা ভালো মানের ফেলোশিপ দিতে হবে। ন্যুনতম ৩০০০০ টাকা যেন তাকে সংসার চালানোর চিন্তা করতে না হয়। বাহিরের দেশে যেমন ভারতের একজন পিএইচডি ছাত্র ফেলোশিপ পায় ৪৫০০০ টাকা। আমি যদি ভারত থেকেও এক বা দুইজন পোস্ট-ডক পেতাম তাহলে বাংলাদেশ বসেই ভালো গবেষণা করা যেত।


আমাদের দিন একজন পোস্ট-ডক আর দুইজন পিএইচডি ছাত্র তারপর দেখুন এই দেশে ভালো মানের গবেষণা হয় কিনা। পোস্ট-ডক্টরাল position দিলে ভারত থেকে অনেক ভালো মানের গবেষক পাব। তাদের লাভ যে পোস্ট-ডক্টরাল এক্সপেরিয়েন্স দেখিয়ে অন্যত্র চাকুরী পাবে আর আমাদের লাভ এখানে গবেষনার একটা এনভায়রনমেন্ট তৈরী হবে। সারা পৃথিবীতে এভাবেই গবেষনা হয়। আমরা আন্তর্জাতিক ট্রেন্ডস ফলো করব না, তো আন্তর্জাতিক গবেষণা হবে কিভাবে? আমাদের আছে শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয় যার ৯০% বিশ্ববিদ্যালয়েই পিএইচডি ছাত্র নেই। ১০% বিশ্ববিদ্যালয়ে যে আছে তাও নামে মাত্র। আর পোস্ট-ডক্টরাল position? সন্দেহ হয়. যারা ওগুলো চালায় তারা এ সম্মন্ধে কখনো কিছু শুনেছি কিনা। আমাদের এখানে পিএইচডি প্রাপ্ত শিক্ষক বা গবেষকের অভাব নেই কিন্তু পোস্ট-ডক্টরাল experience আছে এরকম শিক্ষক বা গবেষকের সংখ্যা আমার ধারণা খুবই কম। এগুলোও একটা দেশের শিক্ষা ও গবেষনার একটা ধারণা সূচক হতে পারে।

কামরুল হাসান
অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

0 comments:

Post a Comment