Friday, August 7, 2015

Are they journal or waste paper?


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটা জার্নাল বের হয় যার নাম Dhaka University Journal of Science। অনেক দিন ধরে বুঝতে চেষ্টা করেছি এই জার্নালের উদ্দ্যেশ্য কি? শুধু কি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়? বাংলাদেশের অনেকগুলো পাবলিক এমনকি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়েরও তাদের বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক জার্নাল আছে। এই জার্নালগুলোর author কারা? আরো গুরুত্বপূর্ণ হলো reviewer কারা, এডিটরিয়াল বোর্ডে কারা। যারা reviewer বা এডিটরিয়াল বোর্ডে আছেন তাদের নিজেদের রিসার্চ পাবলিকেশনের কি অবস্থা। আমি নিশ্চিত জানি অধুনা Dhaka University Journal of Science-এর একজন এডিটর ছিলেন যিনি গত ২৫-৩০ বছরে কোন রিসার্চ পেপার আন্তর্জাতিক এমনকি দেশীয় জার্নালে পর্যন্ত প্রকাশিত হয়নি। তিনি কোন পিএইচডি এমনকি এমএস ছাত্র পর্যন্ত supervise করেননি। এছাড়া অন্যরা যারা ছিলেন তারাও যে বলার মত বা উল্লেখযোগ্য কিছু করেছেন এমন না। হবে কিভাবে? পঞ্চাশের অধিক আন্তর্জাতিক জার্নালে পাবলিকেশন আছে এরকম শিক্ষক আমার জানা মতে আমাদের হাতে গুনা দুয়েকজন আছেন। একটা জার্নালের এডিটরের কি পরিমান রিসার্চ পেপার থাকা উচিত সেটা কম বেশি আমরা অনেকেই জানি। তাদের সাথে আমাদের মিলালে পার্থক্যটা স্পস্ট হবে। যাদের রিসার্চ-এর সাথে কোন যোগাযোগ নেই তারাই editorial বোর্ডে, তারা হয় reviewer। কি বিচিত্র আমার সোনার বাংলা!! লজ্জাও লাগে না? 

এমন পরীক্ষা যদি থাকে যেখানে পরীক্ষা দিলেই পাশ সেটাকে যেমন আর যাই হউক পরীক্ষা বলা যায় না তেমনি এমন জার্নাল যদি থাকে যেখানে submit করলেই accepted সেটাকে আর যাই হোক জার্নাল বলা যাবে না। পৃথিবীর সবচেয়ে নামী দামী সাইন্টিফিক জার্নাল হলো Nature, Science। এসব জার্নালে submit করলে editorial ডেস্ক থেকেই ৯০%-এর অধিক submitted পেপার ফেরত দেওয়া হয়। বাকিদের reviewer-এর কাছে পাঠায় এবং ওখান থেকে খুবই কম percentage অফ পেপার finally প্রকাশিত হয়। আর আমাদের Dhaka University Journal of Science-এ কি ঘটে? এখানে কারো যদি প্রমসন দরকার হয় এবং আরো দুই-তিনটা পাবলিকেশন হলে ন্যুনতম যোগ্যতা অর্জন হয় তখন এটা অর্জনে একসাথে দুই বা তিনটি আর্টিকেল কোনভাবে লিখে এডিটরের কাছে যাবে। গিয়ে অনুনয়, দয়া বা দাক্ষিণ্য চাইবে। বলবে স্যার আমারতো প্রমসনটা হচ্ছে না আমার এই আর্টিকেলগুলোর একটা acceptance দিলে এটা দিয়ে আপাতত কাজ চালিয়ে নিতে পারি। ইতিমধ্যে দুজন favourable reviewer দিয়ে রিভিউ করিয়ে accept করিয়ে নিন। এডিটররাও এসব সুযোগে থাকেন। কাউকে extra-ordinary favour দিলেইতো বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক নির্বাচনে extra-ordinary সাপোর্ট পাওয়া যায়। আমি আজ পর্যন্ত আমার কোন সহকর্মীকে দেখিনি ওটা পড়তে। আমার pigeonhole-এ এই জার্নালটি প্রায়ই পাই আর আমি straight ওটা বিনে ফেলে দিই। শুধু আমি না আমাদের কবির স্যারকেও দেখেছি ওই একই কাজ করতে। প্রথম প্রথম ওটা একটু নেড়ে চেড়ে দেখতাম কিন্তু কোন কিছু শিক্ষার মত কিছুই পেতাম না।

Dhaka University Journal of Science-এর এডিটর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের, reviewer-ও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই হয়। পৃথিবীর কিছু কিছু নামী বিশ্ববিদ্যালয়েরও নিজস্ব জার্নাল আছে। কিন্তু ওগুলোর editorial বোর্ড এবং reviewer সাধারণত অন্য বিস্বদিদ্যালয়ের হয় এবং এই প্রকাসনালোয়টি স্বায়ত্বশাসিত অর্থাত বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ন্ত্রনের বাহিরে। আর আমাদের এখানে কোন একটি editorial পদ খালি হলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি প্রজ্ঞাপন যায় প্রতিটি বিভাগ থেকে। আর বিভার বিষয়টি একাডেমিক মিটিং-এ আলোচনা করে একজন সিনিয়র most শিক্ষককে নির্বাচন করে। উল্লেখ্য এখানে ওই শিক্ষকের রিসার্চ প্রোফাইল নিয়ে কেউ আলোচনা করবেন না।

এখন আমাদের যদি এরকম জার্নালে আর্টিকেল প্রকাশিত করে আমাদের প্রমসনগুলো ঠিকঠাক মত হয়ে যায় তখন কোন বলদে আন্তর্জাতিক মানের কাজ করে অন্তরিজাতিক জার্নালে প্রকাশিত করার চেষ্টা করবে? এখন আমাদের যদি এরকম জার্নালে আর্টিকেল প্রকাশিত করে আমাদের প্রমসনগুলো ঠিকঠাক মত হয়ে যায় তখন কোন বলদে আন্তর্জাতিক মানের কাজ করে অন্তরিজাতিক জার্নালে প্রকাশিত করার চেষ্টা করবে? আনতর্জাতিক জার্নাল নিয়েও আমাদের fallacy কম না!! মানুষকে বোকা বানাতে বাঙালিদের জুড়ি মেলা দুস্কর। আমাদের অনেকেই আছেন যারা সিলন জার্নাল অফ physics বা পাকিস্তানি, ইরানি জার্নালে পাবলিশ করে। এখানে দুটো বিষয় ১) কাজটি ভালো না। ভালো হলেতো একটা ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর সম্পন্য জার্নালে পাবলিশ করত। ২) বিদেশী অর্থাত ভারতের কোন পাড়াগায়ের জার্নাল অথবা পাকিস্তানি, ইরানি জার্নালে পাবলিশ করে পাবলিকেশনকে আন্তর্জাতিক বলে চালানোর এক ধূর্ত মানসিকতা। আন্তর্জাতিক বলতে বুঝায় আন্তর্জাতিক মানের অর্থাত একটা জার্নাল যার নন-জিরো ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর আছে। আমি মাঝে মাঝে ভাবি আমাদের শিক্ষকরা ভারতের কোন পাড়াগায়ের জার্নাল অথবা পাকিস্তানি, ইরানি জার্নালগুলোর খোজ পায় কিভাবে?

ভালো কাজের জন্য সিস্টেম থেকে একটা প্রেসার থাকতে হবে। ঢাকার খুব কাছের একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে একটি জার্নাল প্রকাশিত হয়। এই জার্নালটির শুরুর ইতিহাস বেশ মজার। শুনেছি ওখানকার কয়েকজন শিক্ষকের অনেকদিন প্রমসন হচ্ছিল না প্রয়োজনীয় পাবলিকেশনের অভাবে। তাই কয়েকজন মিলে তৈরী করে ফেলল একটি জার্নাল আর প্রথম দুয়েকটা ইসুতে উনাদের প্রত্যেকের একাধিক আর্টিকেল প্রকাশিত করে খুব দ্রুতই তাদের প্রমসন হয়ে যায়। তারপর ওই জার্নাল অনেকদিন পর্যন্ত কোন ইসু প্রকাশিত হয়নি। যখন কিছু শিক্ষকের প্রয়োজন হয় তারা একজোট হয়ে আবার দুইয়েকটা ইসু প্রকাশিত করে আবার বন্ধ। এভাবেই চলছে ওটি। তার চেয়ে কাছের আরো একটি পাবলিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে অধুনা একটি জার্নাল প্রকাশিত হয়!!

আমার কাছে এই জার্নালগুলোকে অনেকটা দেয়ালিকার মত মনে হয়। কারো ইচ্ছে হলে এগুলো প্রকাশ করতে পারেন তবে প্রকাশিত আর্টিকেলগুলো পপুলার সাইন্স based হলে ভালো হয় যেন ছাত্র ছাত্রীরা পড়ে কিছু শিখতে পারে। তবে এসব জার্নালে প্রকাশিত করে প্রমসন নেওয়া যাবে না অর্থাত এগুলোকে শিক্ষকদের পাবলিকেশন হিসাবে চালিয়ে প্রমসন নেওয়া যাবে না

কামরুল হাসান
অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

0 comments:

Post a Comment