প্রস্তাবিত অষ্টম জাতীয় বেতন স্কেল পুনর্নির্ধারণ ও স্বতন্ত্র বেতন স্কেলের দাবিতে কঠোর আন্দোলনের পথে পা বাড়িয়েছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। গত তিন মাস মানববন্ধন, স্মারকলিপি, সংবাদ সম্মেলনের পর এবার কর্মসূচি 'কঠোর' করছেন তারা। গতকাল রোববার সারাদেশের ৩৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ক্লাস বন্ধ
রেখে একযোগে কর্মবিরতি পালন করেছেন শিক্ষকরা। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফেডারেশনের আহ্বানে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
ফেডারেশনের সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ সমকালকে জানিয়েছেন, এখন থেকে প্রতি রোববার সারাদেশের সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন ঘণ্টার কর্মসূচি পালন করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের দাবি পূরণ ছাড়াই মন্ত্রিসভায় নতুন বেতন স্কেল পাস হলে তাৎক্ষণিক জাতীয় সম্মেলন ডেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতিতে চলে যাবেন তারা।
রেখে একযোগে কর্মবিরতি পালন করেছেন শিক্ষকরা। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফেডারেশনের আহ্বানে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
ফেডারেশনের সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ সমকালকে জানিয়েছেন, এখন থেকে প্রতি রোববার সারাদেশের সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন ঘণ্টার কর্মসূচি পালন করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের দাবি পূরণ ছাড়াই মন্ত্রিসভায় নতুন বেতন স্কেল পাস হলে তাৎক্ষণিক জাতীয় সম্মেলন ডেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতিতে চলে যাবেন তারা।
ফেডারেশনের একাধিক শিক্ষক নেতা জানিয়েছেন, বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এখনই অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে যাওয়ার জন্য চাপ রয়েছে। তবে শোকের মাস হওয়ায় এখনই চূড়ান্ত ও সর্বোচ্চ কঠোর কর্মসূচিতে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। এ ছাড়া বেতন স্কেল সংশোধনের জন্য সরকারকে সময় দিতে চান তারা। এজন্য আপাতত প্রতি সপ্তাহে তিন ঘণ্টার কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর পরও দাবি পূরণ না হলে অবশ্যই কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। সাধারণ শিক্ষকরা জানান, প্রস্তাবিত বেতন স্কেল নিয়ে তারা ক্ষুব্ধ, তাদের মধ্যে চরম অসন্তোষেরও সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, বেতন স্কেল নিয়ে সচিব কমিটির করা সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হলে বেতন ও পদমর্যাদা কমে যাবে দেশের ৩৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১৫ হাজার শিক্ষকের। সপ্তম বেতন স্কেলে শিক্ষকরা বর্তমানে যে স্কেলে বেতন পান, তার চেয়ে নিম্ন ধাপে নেমে যেতে হবে তাদের। এ নিয়ে চরম ক্ষুব্ধ তারা।
এর আগে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সঙ্গে দু'দফা বৈঠক করে ও লিখিতভাবে শিক্ষকরা তাদের তীব্র আপত্তির কথা জানিয়েছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অচলাবস্থা তৈরির আশঙ্কার কথাও মন্ত্রীকে জানিয়েছেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গেও শিক্ষকরা বৈঠক করেছেন।
শিক্ষকরা বলছেন, আমলাদের সঙ্গে শিক্ষকদের বেতনের বৈষম্য সৃষ্টি করা হয়েছে সচিব কমিটির সুপারিশে। এটা কোনোভাবেই হতে দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে বেতনের গেজেট হওয়ার দিনই উচ্চ আদালতে রিট দায়ের করবেন তারা। সচিব কমিটির সুপারিশে শিক্ষকরা এতটাই সংক্ষুব্ধ হয়েছেন যে, শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ বৈঠকে তারা শিক্ষা সচিবকে না রাখার অনুরোধ জানান। এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সমকালকে বলেন, বেতন স্কেলের চূড়ান্তকরণের কাজ এখনও প্রক্রিয়াধীন। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আপত্তির কথা তিনি সরকারের উচ্চ মহলে জানিয়েছেন। তিনি আশা করছেন, সম্মানজনক সুরাহা হবে।
ইউজিসি সূত্রে জানা গেছে, দেশের ৩৭টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ১৪ হাজার ৬৮৫ জন শিক্ষক কর্মরত আছেন। তাদের মধ্যে ৫ হাজারের ওপরে অধ্যাপক আছেন। বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপকদের ২৫ শতাংশ সিলেকশন গ্রেড পান, এই হিসাবে তাদের সংখ্যা প্রায় ১ হাজার ২৫০। 'সিলেকশন গ্রেড'প্রাপ্ত অধ্যাপক হিসেবে তারা সরকারের সর্বোচ্চ বেতন স্কেলধারী হন। সপ্তম বেতন স্কেলে সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্ত অধ্যাপকের সংখ্যা ১ হাজার ২৫০।
এই শিক্ষকরা সরকারের সচিব পদমর্যাদায় বেতন-ভাতা পেতেন। দুই বছর আগে 'সিনিয়র সচিব' পদ চালু করা হলে শিক্ষকরা এক ধাপ পিছিয়ে পড়েন। প্রস্তাবিত জাতীয় বেতন স্কেল নিয়ে সচিব কমিটির করা সুপারিশে 'পদায়িত সচিব' ও 'সচিব' নামে পৃথক দুটি স্কেল চালুর প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে শিক্ষকরা দুই ধাপ পিছিয়ে পড়ছেন। সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্ত অধ্যাপকরা জাতীয় বেতন স্কেলে দুই ধাপ পিছিয়ে পড়লে ক্রমান্বয়ে অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষকরাও একইভাবে পিছিয়ে পড়বেন।
বেতন-ভাতার পাশাপাশি মর্যাদা নিয়েও শিক্ষকদের ক্ষোভ রয়েছে। নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. অহিদুজ্জামান সমকালকে বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, এমনকি উপাচার্যদেরও যথাযথ মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে না। রাষ্ট্রীয় মর্যাদাক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর চ্যান্সেলর যদি প্রথম হন, ভাইস চ্যান্সেলর কেন ১৬তম ক্রমে ঠাঁই পাবেন?'
সংকটের মূল যেখানে: শিক্ষকরা বলছেন, ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বেতন কমিশনের সুপারিশ পর্যালোচনা করে সচিব কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে সরকার অষ্টম বেতন স্কেল চূড়ান্ত করতে যাচ্ছে। এই স্কেলের প্রস্তাবনায় সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকদের বেতন কাঠামো পদায়িত সচিবদের এক ধাপ নিচে বিবেচনা করা হয়েছে। এ ছাড়া উলি্লখিত বেতন কাঠামোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মূল বেতন সপ্তম বেতন স্কেল থেকেও এক ধাপ কমিয়ে আনার সুপারিশ করা হয়েছে। শিক্ষকদের বিবেচনায় এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও অগ্রহণযোগ্য।
জানা গেছে, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেকশন গ্রেডের অধ্যাপক ও সরকারের সচিবরা একই স্কেলে (গ্রেড-১) বেতন পান। সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল পদধারীরাও এ তালিকায় রয়েছেন। ফরাসউদ্দিন কমিশন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের গ্রেড-১ থেকে বাদ দেওয়ার সুপারিশ করায় শিক্ষকরা আন্দোলনের হুমকি দেন। পরে সচিব, সিলেকশন গ্রেডের অধ্যাপক ও মেজর জেনারেলদের বেতন কাঠামো এক নম্বর গ্রেডে রাখার সুপারিশ করে আবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠায় সচিব কমিটি। তাদের সবার মূল বেতন হবে ৭৫ হাজার টাকা। তবে এতেও পুরোপুরি খুশি নন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা। তারা চান স্বতন্ত্র উচ্চতর বেতন কাঠামো। তবে আপাতত সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্ত অধ্যাপকরা সরকারের জ্যেষ্ঠ সচিবের মতো এবং অন্য শিক্ষকরা আগের মতোই সম্মান, পদমর্যাদা ও বেতনক্রম চাইছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সপ্তম বেতন স্কেলে একজন অধ্যাপকের মূল বেতন ৩৩ হাজার ৫০০ টাকা। অষ্টম বেতন কমিশনের সুপারিশে তা দ্বিগুণের একটু বেশি করে ৭০ হাজার টাকা করা হয়। সচিব কমিটি এটা ৬৪ হাজার ৬০০ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে। এই অধ্যাপকেরা গ্রেড-২ অনুযায়ী এই বেতন পাবেন। অধ্যাপকের ওপরে আছেন সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্ত অধ্যাপক, যাদের মূল বেতন কমিশন ৮০ হাজার টাকা করার সুপারিশ করা হয়েছিল। সচিব কমিটি এটা ৭৫ হাজার টাকা প্রস্তাব করেছে। সপ্তম বেতন স্কেল অনুযায়ী, সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও সচিব উভয়েই ৪০ হাজার টাকা মূল বেতন পান। এখন তারা এক নম্বর গ্রেডে একই বেতন পাবেন। তবে বেতন কমিশন সিলেকশন গ্রেড তুলে দেওয়ার প্রস্তাব করেছে। আর তা করলে অধ্যাপকদের নেমে আসতে হবে গ্রেড-২ থেকে কয়েক ধাপ নিচে। আর এখানেই শিক্ষকদের আপত্তি।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহম্মদ মিজানউদ্দিন বলেন, 'প্রস্তাবিত অষ্টম বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো উত্তাল হবে। অগি্নগর্ভ পরিস্থিতি যাতে সৃষ্টি না হয় তা বিবেচনা করে আগেই ব্যবস্থা নিতে হবে।' বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে এম নূর-উন-নবী বলেন, 'নতুন বেতন কাঠামোতে সচিব ও অধ্যাপকদের সমতা আনা দরকার। আমার মনে হয় বেতনবৈষম্য এনে শিক্ষকদের অবদমিত করা হচ্ছে। এটা কি তবে নতুন কোনো ষড়যন্ত্র? শিক্ষকদের তুচ্ছ করার জন্য এটা করা হচ্ছে।' খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. ফায়েকউজ্জামান বলেন, 'প্রস্তাবিত বেতন কাঠামোতে শিক্ষকদের বেতন নিয়ে চতুরতা করা হয়েছে। মনে হয়েছে এটা শিক্ষকদের নিচে নামানোর একটা প্রয়াস। এ বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন হলে বিশ্ববিদ্যালয় উত্তাল হবে। এটা দমানো কঠিন হবে।'
শিক্ষকরা যা বলেন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল সমকালকে বলেন, ফরাসউদ্দিন কমিশনের সুপারিশের আলোকে ৫ সদস্যবিশিষ্ট সচিব কমিটি তাদের যে সুপারিশ জমা দিয়েছেন তা খুবই আপত্তিকর। সুপারিশে তারা একদিকে যেমন শিক্ষকদের ন্যায্য অধিকার ক্ষুণ্ন করার মতো প্রস্তাব রেখেছেন, অন্যদিকে তারা একধাপ অগ্রসর হয়ে নিজেদের সুবিধাদি নিশ্চিতের মাধ্যমে অন্যদের সঙ্গে বৈষম্যের ব্যবস্থা করেছেন। সপ্তম বেতন কাঠামোতে শিক্ষকদের যে অবস্থান ছিল প্রস্তাবিত বেতন কাঠামোতে তা দুই ধাপ নামিয়ে আনা হয়েছে; যা শুধু ন্যায়সঙ্গত অধিকার ক্ষুণ্নই করেনি বরং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য অত্যন্ত অবমাননাকর।
গত তিন মাস প্রস্তাবিত বেতন-কাঠামো নিয়ে শিক্ষকরা আন্দোলন করছেন। সব বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েক দফা প্রতিবাদী মানববন্ধন, কর্মবিরতি, অবস্থান ধর্মঘট পালনের পর এখন তিন ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করছেন তারা। এর আগে কয়েক দফা শিক্ষামন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। শিক্ষকরা জানান, দাবি আদায়ে কোনো অংশেই তারা ছাড় দেবেন না। এটা শিক্ষকদের মর্যাদার প্রশ্ন। ৩৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ঐক্যবদ্ধ মোর্চা 'বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন' সবাইকে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনে যাবে। প্রয়োজনে তারা বিষয়টির সুরাহা করতে উচ্চ আদালতে যাবেন। এ ছাড়া তারা শিক্ষক কনভেনশন করে সিদ্ধান্ত নেবেন, তাদের আগামী দিনের কর্মসূচি কী হবে।
বেতন কাঠামো ও বেতন স্কেল নিয়ে শিক্ষকদের শঙ্কা ও ভবিষ্যৎ আন্দোলনের ব্যাপারে জানতে চাইলেভবি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক সমকালকে বলেন, 'শিক্ষকরা বেতন কাঠামো নিয়ে যে দাবি করেছেন, সে আন্দোলন নিয়ে সরকারও চিন্তিত। সরকার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছে। আশা করছি, শিগগির এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।'
এ ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, অষ্টম জাতীয় বেতন স্কেলের সবকিছুই এখনও প্রস্তাব আকারে বিবেচনাধীন। কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তিনি মন্ত্রিপরিষদ ও অর্থ সচিবকে দুটি ডিও লেটার দিয়েছেন। শিক্ষকদের অসন্তোষের বিষয়টি সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নজরে এনেছেন। আশা করছেন সুন্দর ও সম্মানজনক সমাধান হয়ে যাবে।
Source:http://www.samakal.net/2015/08/17/155951
0 comments:
Post a Comment